সুরা মুদাসসির এবং ফেরেসতার সংখ্যা উনিশ এবং উনিশ তত্ব উদঘাটন ।
"সেখানে (জাহান্নামে) নিয়োজিত আছে উনিশ জন ফেরেশতা।
আমি ফেরেশতাদেরকে জাহান্নামের প্রহরী রেখেছি কাফিরদের পরীক্ষার জন্য আমি তাদের এই সংখ্যা উল্লেখ করেছি যাতে আহলে কিতাবের দৃঢ় বিশ্বাস জন্মে ঈমানদারদের ঈমান বর্ধিত হয় এবং বিশ্বাসীগন এবং আহলে কিতাব যেন সন্দেহ পোষন না করে । এর ফলে যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে তারা ও কাফিররা বলবেঃ আল্লাহ এ বর্ণনা দ্বারা কি বুঝাতে চেয়েছেন ? এইভাবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা হেদায়েত দান করেন। তোমার প্রতিপালকের বাহীনি সম্পর্কে একমাত্র তিনিই জানেন। এই বর্ণনা তো সমস্ত মানুষের জন্য নিছক উপদেশ ।
(সূরা মুদ্দাসসির : ৩০,৩১)
এই আয়াতে বলা হচ্ছে জাহান্নামের আগুন নিয়ন্ত্রনের জন্যে ১৯ জন ফেরেশ্তা রাখা হয়েছে। আর তাদের সংখ্যাকে কাফেরদের পরিক্ষা করার জন্য নিধারণ করা হয়েছে।
একই সাথে কিতাবীদের বিশ্বাস দৃঢ় করতে আর মুমিনদের ইমান বৃদ্ধির কাজেও লাগবে । তার মানে এখানে ১৯ সংখ্যা দিয়ে আল্লাহ কিতাবীদের ঈমান বৃদ্ধি করেছেন ।
মিশরের খ্যাতনামা বিজ্ঞানী ড. রশিদ কোরআন নিয়ে এক ব্যাপক গবেষণা চালিয়েছেন। তিনি প্রাথমিকভাবে কোরআনের প্রতিটি অক্ষর যেভাবে কোরআনে সন্নিবেশিত আছে সেভাবেই তাকে কম্পিউটারে বিন্যস্ত করেন।
কোরআনে ১১৪ টি সূরার অবস্থান এবং ২৯ টি সূরার শুরুতে ব্যবহিত ‘হরুফে মোকাত্তায়াত’ যে নিয়মে বিন্যস্ত আছে সে নিয়মের ভিত্তিতে তিনি হিসাব করতে শুরু করেন। এতে করে কোরআনের কিছু অলৌকিক তত্ত্ব তাঁর কম্পিউটার স্ক্রীনে ভেসে উঠে। এ অলৌকিক তত্ত্বের একটি হচ্ছে যে, সমস্ত কোরআন গনিতের এক রহস্যময় বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আছে।
কোরআনের সর্বত্র একটি বিস্ময়কর গানিতিক সংখ্যার জাল বোনা রয়েছে। আল্লাহ সংখ্যার মাধ্যমে আল কুরআনকে এমন এক গানিতিক ফর্মুলায় সাজিয়ে রেখেছেন যেন এতে ব্যবহৃত বর্ণমালা , শব্দ ও আয়াতসমূহের কোনোরকম পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোজন এবং বিয়োজন কারো পক্ষে সম্ভব না হয়।
সমগ্র কোরআন যেন ১৯ সংখ্যাটিরই একটি সুদৃঢ় বন্ধন। এই ফর্মুলাটি তৈরি হয়েছে ১৯ সংখ্যাটির গানিতিক অবস্থান দিয়ে।
১)
(ক) ১৯৭৪ সালে প্রথম আবিস্কৃত হয় যে, কোরআনের প্রতিটি সূরা, প্রতিটি আয়াত, এমনকি প্রতিটি শব্দ ১৯ সংখ্যার সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত।
আরো ব্যপক গবেষণার ফলে ফলাফল এখন এমন পর্যায়ে এসেছে যে, যে কেউ সামান্য গুন, ভাগ বুঝতে পারলে, কোরআনে ১৯ এর প্রয়োগ বুঝতে পারবে।
এসব গবেষণার ফল আমাদেরকে স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, এই কিতাবটিতে ১৯ সংখ্যাটিকে একটি গানিতিক কোড হিসেবে ব্যাবহার করা হয়েছে। যা কিতাবটিকে সুরক্ষিত করেছে। আল্লাহ পরম কৌশলী ।
(খ) কোরআন যে ১৯ সংখ্যার গানিতীক কোড দিয়ে সাজানো প্রথম আবিষ্কৃত হয় ১৯৭৪ সালে। আরবী "মুদ্দাসসির" শব্দটির অর্থ "লুকায়িত" বা গোপন।
সূরা মুদ্দাসসির কোরআনের ৭৪ তম সূরা, আর এই সূরাতেই ১৯ সংখ্যাটির প্রয়োগ উল্লেখ করে একটি আয়াত (৩০ নং) আছে।
কথা হচ্ছে, যখন আমরা আবিষ্কৃত ১৯ আর সূরা মুদ্দাসসির এর কোরআনে অবস্থান ৭৪ কে পাশাপাশি বসাই, তখন যে সংখ্যাটি পাওয়া যায় তা হলো ১৯৭৪,
যা যে সালে বিষয়টি আবিষ্কার হয়েছে তার সমান। হযরত ইসা (আ এর জন্মের পর ১৯৭৪ বছর ধরে একটা গোপন রহস্য মানবজাতীর জ্ঞানচক্ষুর আড়ালে রেখে দিয়েছিলেন মহাশক্তিশালী বিচার দিনের মালিক, কি মহামহিম তিনি ।
১৯৭৪ সালটি যখন দুনিয়াতে চলছিল, তখন দুনিয়াতে হিজরী সাল চলছিল ১৩৯৩ সাল। কোরআন প্রথম নাজিল হওয়া শুরু হয় হিজরতের ১৩ বছর আগে। এই তের বছর ১৩৯৩ এর সাথে যোগ করলে মোট দাড়ায় ১৪০৯ বছর।
অর্থাৎ কোরআন নাজিলের শরু থেকে শুরু করে মোট ১৪০৯ বছর পর কোরাআনের একটা "মুদ্দাসসির" বা "গোপন" রহস্য উন্মোচিত হয়।
১৪০৯ ?? এটার আবার গুরুত্ব কি ? হুম দেখুন---- ১৯ কে ৭৪ দিয়ে গুন করলে ১৪০৯ হয়ে যায় যে! ১৯*৭৪=১৪০৯।
(গ) এই সূরার প্রথম দুই আয়াত এরকম
১. হে চাদরাবৃত ২. উঠুন সতর্ক করুন। এই দুই আয়াতে মোট অক্ষর এর সংখ্যা ১৯ টি।
আর আয়াতদুটির মোট সংখ্যাগত মান হিসাব করলে তা দ্বারায় ১৯৭৪! সতর্ক কেন করতে বলেছেন তিনি, বুঝেছেন ?
আয়াত দুটি হল, ইয়া আইয়্যুহাল মুদ্দাসসির, কুম ফাআনযির।
ইয়া=১০, আলিফ=১, আলিফ=১, ইয়া=১০, আলিফ=১, আলিফ=১, লাম=৩০, মিম=৪০, দাল=৪, ছা=৫০০, র=২০০, ক্বাফ=১০০, মিম=৪০, ফা=৮০, আলিফ=১, নুন=৫০, যাল=৭০০, র=২০০
মোট মান যোগফল=১৯৭৪। সুবহানাআল্লাহ---তিনি কত মহান--!
সূরাটি ৭৪ নং সূরা, মুদ্দাসসির শব্দটা আছে ১ নং আয়াতে। সুতরাং ১ নং আয়াতকে কোথাও রেফার করা হয় (৭৪,১) লিখে। কমা ছারা সংখ্যাটি ৭৪১,
এই ১ নং আয়াতটি থেকে শুরু করে , কোরআনের সর্বশেষ আয়াত পর্যন্ত গননা করলে মোট ৭৪১ টা আয়াত পাওয়া যায়। ৭৪১ আক্ষরটাও ১৯ দ্বারা বিভাজ্য (১৯*৩৯=৭৪১)।
(ঘ) সূরাটিতে অগ্নি অর্থে "সাকার" শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে ২৬, ২৭ ও ৪২ নং আয়াতে।
যেগুলোতে বলা হচ্ছে, যারা সুস্পষ্ট নিদর্শন দেখার পরও, কোরআনকে মানুষের উক্তি বলবে, তাদেরকে সাকার বা অগ্নিতে নিক্ষেপ করা হবে।
এখন ২৬+২৭+৪২=৯৫, লক্ষনীয় ১৯*৫=৯৫। এই ২৬, ২৭ ও ৪২ নং আয়াত তিনটির সংখ্যাগত মান (৫৫৬,৬৮৩,৬৬১) একত্রে যোগ করলে পাওয়া যায় ১৯০০, লক্ষনীয় ১৯*১০০=১৯০০।
আরো অবাক ব্যাপারটা হলো, যদি আমরা এই তিনটি আয়াতের সংখ্যাগত মানের সাথে, কোরআনের সূরাটির অবস্থান (৭৪) কে যোগ করি তাহলে আমরা সেই সালকে পাব যে সালে ১৯ এর রহস্য আবিষ্কার করা হয় ১৯৭৪ ।
(ঙ) যে সূরাতে এতোকিছুকে গোপন করে রাখা হয়েছে, তার নাম মুদ্দাসসির কেন দেয়া হলো, এবার বুঝতে পেরেছি!
আপনি যদি সূরা মুদ্দাসসির পরেন, তাহলে দেখবেন, এই সূরাটির ১ টি আয়াত বাদে বাকি সব আয়াতগুলো খুব ছোট ছোট।
আর এই অস্বাভাবিক আয়াতটা হচ্ছে সূরাটির ৩১ নং আয়াত। একমাত্র এই আয়াতেই ১৯ এর কার্যকারিতা সম্বন্ধে বলা হয়েছে।
সূরাটর ১ টি আয়াতে গড়ে যতগুলো অক্ষর এসেছে, তার ১২ গুন অক্ষর এসেছে এই ৩১ নং আয়াতে।
উল্লেখ্য কোরআনের সবচেয়ে বড় আয়াত, সূরা বাকারার ২৮২ নং আয়াত।
সূরা বাকারাতে একটি আয়াতে গড়ে যতগুলো অক্ষর এসেছে, তার সমান ৬ গুন অক্ষর এসেছে ২৮২ নং আয়াতটিতে।
অর্থাৎ গড় অনুপাতের দিকে বিবেচনা করলে মুদ্দাসসির এর ৩১ নং আয়াতটি বাকারার ২৮২ নং আয়াতেরও ২ গুন। এই আয়াতটিতেই যেহেতু এসেছে ১৯ সংখ্যাটির কথা,
তাই নিশ্চয়ই আয়াতটির মধ্যে ১৯ এর রহস্য লুকানো আছে ! আছে কি ? আয়াতটিতে মোট ৫৭ টি শব্দ আছে। ১৯*৩=৫৭।
আবার আয়াতটির যে বাক্যটিতে ১৯ অক্ষর আছে তাতে ৩ টি শব্দ আছে। ৩ এর একটা অর্থ আছে এখানে। তা হলো এই আয়াতে শব্দ সংখ্যা ৫৭, যেটা ১৯ কে ৩ দিয়ে গুন করে পাওয়া যায়।
আয়াতটির একটা বাক্য হলো,
"--------- আল্লাহ এর দ্বারা কি বুঝাতে চেয়েছেন?" এই বাক্যটিতে মোট ১৯ টা শব্দ আছে। আর আয়াতটির প্রথম থেকে এই আয়াত পর্যন্ত শব্দ সংখ্যা ৩৮ টি।
লক্ষনীয়, ১৯*২=৩৮। আরো লক্ষনীয় এই বাক্যটির পরের বাক্যগুলোতে মোট ১৯ টা শব্দ আছে।
(চ) প্রথম থেকে শুরু করে এই অস্বাভাবিক বড় আয়াতটি পর্যন্ত মোট আয়াত ৩০ টি। এই ৩০ টি আয়াতে মোট শব্দ সংখ্যা ৯৫ টি । লক্ষনীয, ১৯*৫=৯৫।
প্রথম থেকে শুরু করে এই আয়াতে উল্লেখিত "উনিশ" শব্দটি পর্যন্ত মোট ৩৬১ টি অক্ষর আছে। ৩৬১ কে ১৯ দিয়ে ভাগ করলে ১৯ পাওয়া যায়। (১৯*১৯=৩৬১)।
সূরাটির প্রথম থেকে উনিশতম আয়াত পর্যন্ত শব্দ সংখ্যা ৫৭ টি। ১৯*৩=৫৭।
সূরাটিতে ক্রমিক নম্বর সহ আয়াত আছে মোট ৫৬টা। আর ক্রমিক নম্বর ছারা বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম আয়াতটি আছে সূরার শুরুতে। তাহলে মোট আয়াত ৫৬+১=৫৭। লক্ষনীয় ১৯*৩=৫৭।
রাব্বুল আলামীন নিশ্চয়ই বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম কে "মুদ্দসসির" (গোপন) রেখেছেন সূরাটির নামটিকে শিল্পোত্তির্ণ করতে!
২) "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম"
ক. ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ এই ক্ষুদ্র আয়াতটি ৪টি শব্দ এবং ১৯ টি অক্ষর দ্বারা গঠিত। কোরআনে মোট ১১৪ বার এই আয়াত এসেছে। যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য
খ. এই আয়াতে মোট চারটি শব্দ আছে। ইসম, আল্লাহ, রহমান ও রহীম। ইস্ম অর্থ নাম, আল্লাহ হচ্ছে স্রষ্টার মূল নাম, রহমান অর্থ দাতা, রহীম অর্থ করুণাময়।
এই চারটি শব্দ কোরআনে যতবার করে এসেছে সেই সংখ্যাগুলো ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
ইসম ১৯ বার এসেছে; যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। ১৯/১৯=১ ।
আল্লাহ - ২৬৯৮ বার এসেছে; যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। ২৬৯৮/১৯=১৪২ ।
রহমান - ৫৭ বার এসেছে; যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। ৫৭/১৯=৩ ।
রহীম - ১১৪ বার এসেছে; যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। ১১৪/১৯=৬ ।
এমনকি ১৯ দিয়ে ভাগ করার পর যে সংখ্যাগুলো পাওয়া গেলো এদের যোগফলও ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। (১+১৪২+৩+৬) = ১৫২/১৯=৮ ।
গ. কোরআনে এই চারটি শব্দের অন্তত একটি শব্দ আছে এরকম আয়াতের সংখ্যা কত ? এরকম আয়াতের সংখ্যা ১৯১৯!!! যা নি:সন্দেহে ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
ঘ. ইসম শব্দটির অর্থ নাম। বাকি তিনটি শব্দ আল্লাহ তায়ালার পবিত্র নাম। এই তিনটি শব্দের সংখ্যাগত মানের যোগফলও ১৯ দ্বারা বিভাজ্য!
আল্লাহ (৬৬) + রহমান (৩২৯) + রহীম (২৮৯) = ৬৮৪। ৬৮৪/১৯=৩৬ ।
ঙ. হরুফে মুকাত্তায়াত সম্বলিত সূরাগুলোর মধ্যে এই চারটি শব্দ এসেছে মোট ১২৯২ বার। সংখ্যাটি ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
ইসেম ৩১ বার + আল্লাহ ১১২১ বার+রহমান ৬৬ বার + রহীম ৭৪ বার =১২৯২ বার। ১২৯২/১৯=৬৮ ।
চ. "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" বাক্যটির চারটি শব্দ কোরআনে যতবার যে সংখ্যায় এসেছে, শব্দগুলোর অপরিহার্য গুণবাচক শব্দটিও ঠিক ততবার করে এসেছে।
ইসম এর অপরিহার্য গুনবাচক শব্দ "হয়াহেদ" এসেছে ১৯ বার।
আল্লাহ এর অপরিহার্য গুনবাচক শব্দ "যুল ফাদল" এসেছে ২৬৯৮ বার।
রহমান এর অপরিহার্য গুনবাচক শব্দ "মাজিদ" এসেছে ৫৭ বার।
রহীম এর অপরিহার্য গুনবাচক শব্দ "জামেউ" এসেছে ১১৪ বার।
ছ. "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" আয়াতটিতে ব্যবহৃত ১৯ টি সংখ্যামানের সমষ্টি যা হল ৭৮৬, আয়াতটিতে একই অক্ষরের পুনরাবৃত্তি বাদ দিলে মৌলিক অক্ষর থাকে মোট ১০ টি।
আয়াতটিতে পুনরাবৃত্তি অক্ষরগুলোর সংখ্যামান ৪০৬। ৭৮৬ থেকে ৪০৬ বাদ দিলে থাকে ৩৮০। যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
জ. সূরা তওবা "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" দিয়ে শুরু হয়নি। অন্যদিকে সূরা নামলে এই বাক্যটি ২ বার এসেছে। ফলে বাক্যটির মোট রিপিটেসন ১১৪ হয়েছে। যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
একইসাথে সুরা তওবা থেকে সূরা নামল পর্যন্ত মোট সূরা সংখ্যা ১৯।
ঝ. সূরা নামল কোরআনের ২৭ নং সূরা। এই সূরার শুরুতে একবার এবং ৩০ নং আয়াতে একবার "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" বাক্যটি এসেছে।
৩০ তম সংখ্যাটি ১৯ তম নন প্রাইম সংখ্যা। (৪,৬,৮,৯,১০,১২,১৪,১৫,১৬,১৮,২০,২১,২২,২৪,২৫,২৬,২৭,২৮, ৩০)।
প্রথমে "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" আছে ১১৩ টি সূরাতে। ১১৩ সংখ্যাটি অংকের ৩০ তম প্রাইম নাম্বার!
ঞ. যদি আমরা যোগ করি সূরা নামলের ক্রমিক নং (২৭) এবং রিপিট হওয়া "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" এর আয়াত নাম্বার (৩০),
তাহলে যোগফল হবে ৫৭ ! যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
ট. ৯ নং সূরা (সূরা তওবা) তে "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" নাই। ২৭ নং সূরাতে আছে দুই বার।
যদি আমরা যোগ করি ৯ নং থেকে ২৭ নং সূরা পর্যন্ত, সূরার ক্রমিক নং গুলো (৯+১০+১১+.......+২৭) তাহলে যোগফল পাব ৩৪২। ৩৪২ সংখ্যাটি ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
২৭ নং সূরাটির ৩০ নং আয়াত যেখানে রিপিটেড "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" পাওয়া গেছে, সূরাটির প্রথম শব্দ থেকে রিপিটেড বিসমিল্লাহ শব্দ পর্যন্ত মোট শব্দ আছে ৩৪২ টি।
৯ নং সূরার প্রথম থেকে শুরু করে ২৭ নং সূরার রিপিটেড "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" পর্যন্ত মোট আয়াত সংখ্যা ৩৪২ টি।
এই পরিসংখ্যানগুলোর একটার সাথে আরেকটার গণনায় বাহ্যিক কোন সম্পর্ক নেই, অথচ এরা কি সামঞ্জস্যতার সাথে ঘোষণা দিচ্ছে রিপিটেড ও মিসিং "বিসমিল্লাহির
রাহমানির রাহিম" আয়াতটির অবস্থানগত কারনের!
ঠ. এবার আমরা একটু অন্যভাবে পরিক্ষা করবো কোরআনকে।
আমরা সুরা নামলের ৩০ নং আয়াতকে মধ্য আয়াত ধরে (যে আয়াতে মিসিং "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" পাওয়া গেছে) কোরআনকে দুই ভাগ করে ফেলব।
ভাগ করার পর দেখা যাবে, প্রথম ভাগে ইসেম+আল্লাহ+রহমান+রহীম শব্দের মোট সংখ্যাকে ১৯ দ্বারা ভাগ করা যাবে। এমনকি দ্বিতীয় ভাগেরটাও।
দুইভাগ করার পর,
প্রথম ভাগে শব্দের সংখ্যা : ইসেম - ৯, আল্লাহ - ১৮১৪, রহমান - ৩৫, রহীম - ৮০ মোট ১৯৩৮ =১৯*১০২।
দ্বিতীয় ভাগে শব্দের সংখ্যা : ইসেম - ১০, আল্লাহ - ৮৮৪, রহমান - ২২, রহীম - ৩৪ মোট ৯৫০ =১৯*৫০।
৩) কোরআনে মোট ১১৪ টি সূরা আছে। ১১৪ সংখ্যাটি ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। ১১৪/১৯=৬ ।
৪) কোরআনে বর্ণিত আল্লাহতায়ালার সর্বমোট নামের সংখ্যা (মূল ও গুনবাচক মিলে) ১১৪ বার, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
৫) সূরা ‘আলাক’ এর প্রথম পাঁচ আয়াত দ্বারা দুনিয়ার বুকে আল কোরআন নাযিল শুরু হয়।
**এই পাঁচ আয়াতে রয়েছে ১৯ টি শব্দ।
**এই পাঁচ আয়াতে অক্ষর রয়েছে ৭৬ টি , ৭৬ শব্দটিও ১৯ দ্বারা নি:শেষে বিভাজ্য। ৭৬/১৯=৪ ।
**এই পাঁচ আয়াত সহ সূরা ‘আলাক’ এর মোট আয়াত সংখ্যা ১৯।
**এই ১৯ টি আয়াতে অক্ষর রয়েছে ২৮৫ টি , যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। ২৮৫/১৯=১৫ ।
**পবিত্র কোরআনের শেষের দিক থেকে কেউ যদি গুনতে শুরু করে তাহলে ১১৪ থেকে ৯৬ পর্যন্ত গুনে আসলে দেখা যাবে পিছন থেকে ১৯ নং সূরাটি হচ্ছে সূরা ‘আলাক’
৬) প্রথম ওহী সূরা আলাকের প্রথম পাচটি আয়াতের শব্দসংখ্যার মতই কোরআনের আরো বহু পরিসংখ্যান ১৯ দিয়ে ভাগ করা যায়।
কোরআন যিনি নিয়ে এসেছেন তিনি রাসূল। রাসূল শব্দটি এসেছে- ৫১৩ বার।
যার বানি রাসূল নিয়ে এসেছেন তিনি রব। রব শব্দটি এসেছে- ১৫২ বার।
কোরআনের কেন্দ্রীয় বানি হচ্ছে ইবাদাত। ইবাদাত শব্দটি এসেছে- ১৯ বার।
কেন্দ্রীয় বানির অপর পরিভাষা হচ্ছে আবদ। আবদ শব্দটিও এসেছে- ১৫২ বার।
আবদ এর কাজ যে করবে তাকে বলে আবীদ। আবিদ শব্দটিও এসেছে- ১৫২ বার।
এ সব কটি পরিসখ্যানই ১৯ দিয়ে ভাগ করা যায়।
৭) সূরা মুদদাসসির এর ৩০ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, "এর উপর রয়েছে ১৯" যা আমি শুরুতে একবার বলেছি।
ঘটনা তা না, ঘটনা হল- আল্লাহ তায়ালা সূরা মুদদাসসির এর ৩০ নং আয়াতটি নাযিলের পর একটু বিরতি দিয়ে সুরা আলাকের বাকি ১৪ টি আয়াত নাযিল করেন।
এর ফলে পুর্বে নাযিলকৃত ৫ আয়াত সহ, গোটা সূরা আলাকের আয়াত দাড়ালো ১৯ ।
সূরাটিতে ১৯ এর যে আকষ্যিক কোন কারিসমা রচিত হয় নি, বরং এর পিছনে রয়েছে আল্লাহ তায়ালার সূক্ষ ইচ্ছা তা এই ঘটনার রহস্য বুঝে বুদ্ধিমানরা সহযেই আন্দাজ করতে পারবেন।
৮) কোরআনে "সংখ্যা" এর উল্লেখ আছে ২৮৫ বার। যা ১৯ দ্বারা বিভায্য। আবার কোরআনে যে সংখ্যাগুলো উল্লেখ আছে তাদের যোগফল করলে দাড়ায় ১৭৪৫৯১, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
৯) কোরআনের সর্বশেষ সূরাটি হল সূরা আন-নাস। এটি ১১৪ তম সূরা। এ সূরার শব্দ সংখ্যা হল ১৯। আর এই ১৯ টি শব্দে আছে মোট ৬ টি আয়াত। ১৯*৬=১১৪।
১০. কুরআনে বর্ণিত আল্লাহ তায়ালার সর্বোমোট নামের সংখ্যা ১১৪ টি (মূল ও গুনবাচক মিলে), যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
১১) কোরআনে বিভিন্ন সূরা শুরু হয়েছে বিচিত্র কিছু বর্ণমালা দিয়ে। এগুলোর কোন অর্থ কেউ এখনো বের করতে পারেনি। এগুলোকে বলা হয় "হরুফে মুকাত্তায়াত"।
যেমন আলিফ-লাম-মিম, হা-ত্বোয়া-সিন ইত্যাদি।
ক. হরুফে মুকাত্তায়াত আছে ২৯ টি সূরার শুরুতে। হরুফে মুকাত্তায়াত মোট ১৪ টি মৌলিক বর্ণ সমাহারে গঠিত। ১৪ টি বিভিন্ন সমাহারে এই বর্ণগুলো ব্যবহৃত হয়েছে।
এদের যোগফল ২৯+১৪+১৪=৫৭, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
খ. "আলিফ-লাম-মিম" এই হরুফে মুকাত্তায়াতটি ব্যবহৃত হয়েছে ৬ টি সূরার শুরুতে।
সূরা বাকারা, সূরা আল-ইমরান, সূরা আনকাবুত, সূরা রুম, সূরা লুকমান, ও সূরা সাজদায়।
সূরা বাকারা : আলিফ-৪৫০২ লাম-৩২০২ মিম-২১৯৫ মোট- ৯৮৯৯ বার। যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা আল ইমরান : আলিফ-২৫২১ লাম-১৮৯২ মিম-১২৪৯ মোট-৫৬৬২ বার। যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা আনকাবুত : আলিফ-৭৭৪ লাম-৫৫৪ মিম-৩৪৪ মোট- ১৬৭২ বার। যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা রুম : আলিফ-৫৪৪ লাম-৩৯৩ মিম-৩১৭ মোট- ১২৫৪ বার। যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা লূকমান : আলিফ-৩৪৭ লাম-২৯৭ মিম-১৭৩ মোট-৮১৭ বার। যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা সাজদা : আলিফ-২৫৭ লাম-১৫৫ মিম-১৫৮ মোট- ৫৭০ বার। যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
উল্লেখিত ছয়টি সূরাতে আলিফ মোট ৮৯৪৫ বার, লাম মোট ৬৪৯৩ বার, মিম মোট ৪৪৩৬ বার এসেছে। এদের মোট যোগফল ১৯৮৭৪, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
গ. সূরা মারইয়াম এর হরুফে মুকাত্তায়াত : ক্বাফ, হা, ইয়া, আইন, সোয়াদ। এ সূরায় ক্বাফ-১৩৭ বার, হা-১৭৫ বার, ইয়া-৩৪৩ বার, আইন-১১৭ বার, সোয়াদ- ২৬ বার করে এসেছে। এদের যোগফল- ৭৯৮, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
ঘ. সূরা আরাফ এর হরুফে মুকাত্তায়াত : আলিফ, লাম, মিম, সোয়াদ। এ সূরায় আলিফ ২৫২৯ বার, লাম ১৫৩০ বার, মিম ১১৬৪ বার, সোয়াদ ৯৭ বার করে এসেছে। এদের যোগফল- ৫৩২০, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
ঙ. সূরা মুমিন থেকে সূরা আহক্বাফ পর্যন্ত ৭ টি সূরার শুরুতে রয়েছে একই হরুফে মুকাত্তায়াত; হা-মিম। এ সাতটি সূরায় হা ও মিম এই অক্ষরগুলো যতবার ব্যাবহার হয়েছে তার যোগফল ২১৪৭। এ সংখ্যাটিও ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
চ. সূরা ইউসুফ, সূরা ইব্রাহীম ও সূরা হেজর এর হরুফে মুকাত্তায়াত হচ্ছে আলিফ-লাম-রা।
সূরা ইউসুফ এ আলিফ-লাম-রা এসেছে মোট ২৩৭৫ বার। যা ১৯ দ্বারা বিভায্য।
সূরা ইব্রাহীম এ আলিফ-লাম-রা অক্ষরগুলো এসেছে ১১৯৭ বার। যা ১৯ দ্বারা বিভায্য।
সূরা হেজর এ আলিফ-লাম-রা অক্ষরগুলো এসেছে ৯১২ বার। যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
এছাড়া সূরা ইউনুস ও সূরা হুদ শুরু হয়েছে আলিফ-লাম-রা দিয়ে। এ দুটি সূরাতে এই আক্ষরগুলো ব্যবহৃত হয়েছে মোট ২৮৮৯ বার। এ সংখ্যাটি ও ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
ছ. সূরা রাদ শুরু হয়েছে আলিফ-লাম-রা এই অক্ষর ৪টি দিয়ে। এই সূরাতে এই চারটি অক্ষর এসেছে মোট- ১৪৮২ বার; যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
জ. হরুফে মুকাত্তায়াত সম্বলিত সর্বশেষ সূরা হচ্ছে সূরা কালাম। এই সূরার শুরু মাত্র একটি অক্ষর দিয়ে-নুন। এই সূরাটিতে নুন অক্ষরটি এসেছে ১৩৩ বার, এটিও নি:সন্দেহে ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
১২) আল্লাহ শব্দটি কুরআনে এসেছে ২৬৯৮ বার, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। ১৯*১৪২=২৬৯৮।
এখানে ১৪২ সংখ্যাটির একটি তাৎপর্য খুজে পাওয়া গেছে। কোরআনের কিছু সূরার প্রথম আয়াতে "আল্লাহ" শব্দটি এসেছে।
প্রথম আয়াতে শব্দটি এসেছে মোট ৪২ বার। এখন এই ৪২ এর সামনে আল্লাহ শব্দটির অত্যাবশ্যকীয় গুনবাচক সংখ্যা ১ বসিয়ে দিলে, পাওয়া যায় ১৪২ ।
২৬৯৮ সংখ্যাটিরও একটা সুন্দর তাৎপর্য আছে। আল্লাহ তায়ালার সবচেয়ে বড় নাম হলো 'যুল ফাদল আল-আজিম'। এই নামটির সংখ্যাগত মান ২৬৯৮ ।
যে আয়াতগুলোতে "আল্লাহ" শব্দটি এসেছে, তাদের ক্রমিক নাম্বারগুলো একত্র যোগ করলে পাওয়া যায় ১১৮১২৩, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। ১৯*৬২১৭ ।
প্রথম হরুফে মুকাত্তায়াত "আলিফ-লাম-মিম" আছে ২ নং সূরায়, আর শেষ হরুফে মুকাত্তায়াত "নুন" আছে ৬৮ নং সূরায়।
২ নং থেকে ৬৮ নং সূরা পর্যন্ত "আল্লাহ" শব্দটি এসেছে ২৬৪১ বার। যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
আর বাকি কোরআন জুড়ে শব্দটি এসেছে ৫৭ বার। এটাও ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
১৩) সূরা ইয়াসিনে "ইয়া" হরফটি আছে ২৩৭ বার। আর "ছিন" হরফটি আছে ৪৮ বার। উভয়ের সমষ্টি ২৮৫, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। ২৮৫/১৯=১৫।
১৪) সূরা ত্বহা এর মধ্যে "ত্ব" হরফটি আছে ২৮ বার আর "হা" হরফটি আছে ৩১৪ বার। উভয়ের সমষ্টি ৩৪২, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। ৩৪২/১৯=১৮।
১৫) "হিসাব" শব্দের হিসাব : "যাতে আল্লাহ জেনে নেন যে, রাসূলগণ তাদের পালনকর্তার পয়গাম পৌছিয়েছেন কিনা। আল্লাহর সবকিছুর সংখ্যার হিসাব রাখেন"। (সূরা জ্বীন : ২৮)।
এই আয়াতে "আদাদা" শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে হিসাব বুঝোতে। শব্দটি সূরা জ্বীনের সর্বশেষ আয়াতের সর্বশেষ শব্দ। লক্ষনীয়, কোরআনে ৫৭ (১৯*৩)
প্রকারের বিভিন্ন সংখ্যা (আদ্দা) ব্যাবহার করা হয়েছে। সূরা জ্বীন কোরআনের ৭২ নং সূরা আর "আদাদা" শব্দটি এসেছে এই সূরার ২৮ নং আয়াতে। এখন ৭+২+২+৮= কত ? =১৯ !
"আদাদা" শব্দটি সুরাটির শেষ আয়াতের শেষ শব্দ। এই সূরার প্রত্যেকটি আয়াতের শেষ শব্দগুলোর মোট অক্ষর সংখ্যা ১১৪। ১১৪=১৯*৬ ।
সূরাটির ২৮ টা আয়াত শেষ হয়েছে ২৮ টা শব্দ দিয়ে। কিছু কিছু শব্দ পুনরায় এসেছে। এই পুনরায় আসা শব্দগুলোর রিপিটেসন বাদ দিলে পাওয়া যায় ১৯ টি মৌলিক শব্দ।
আর এই ১৯ টি মৌলিক শব্দ গঠিত হয়েছে ১৯ টি বর্ণের ভিন্ন ভিন্ন সমাহারে। উল্লেখ্য আরবী বর্ণমালা ২৮ টি বিভিন্ন বর্ণ নিয়ে গঠিত। "আদাদা" শব্দটি লিখা হয় আইন, দাল, দাল ও আলিফ বর্ণ দিয়ে।
সূরা জ্বীন এ আইন ৩৭ বার, দাল ৫৪ বার, দাল ৫৪ বার, আলিফ ২১৬ বার করে এসেছে।
এই অক্ষরগুলো মোট রিপিটেশন ৩৭+৫৪+৫৪+২১৬=৩৬১। ১৯*১৯ = কত ? ৩৬১! সুবহানাল্লাহ-----
না জানি আরো কত হিসাব বাকি পরে আছে ! বুঝেছেন ! এতকিছু হিসেব করে এই একটি শব্দ "আদাদা"কে বসানো হয়েছে। কি বিষ্ময়কর এ মহাগ্রন্থ ।
১৬) কোরআনে আসা সংখ্যাগুলো :
(ক) কোরআনে মোট ৩০ টি পূর্ণ সংখ্যা এসেছে। কোরআনে আসা এই ৩০ টি পূর্ণ সংখ্যার সমষ্টি ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
(১*+২*+৩*+৪*+৫*+৬*+৭*+৮*+৯*+১০*+১১+১২*+১৯+২০+৩০*+৪০*+৫০+৬০+৭০*+৮০+৯৯+১০০*+২০০*+৩০০+১০০০*+২০০০+৩০০০+৫০০০+৫০,০০০+১০০,০০০=১৬২,১৪৬ (১৯*৮৫৩৪)।
এই সংখ্যাগুলোর মধ্যে স্টার দেয়াগুলো কোরআনে রিপিট করা হয়েছে। এদের রিপিটেসনকে ধরে নিয়ে যোগ করলে, যে সংখ্যা পাওয়া যায় সেটাও ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
আর সংখ্যাটি হলো ১৭৪,৫৯১। ১৯*৯১৮৯!
(খ) কুরআনে ৩০ টি পূর্ণ সংখ্যা ছাড়াও, ৮টি দশমিক সংখ্যার উল্যেখ আছে। এগুলো হলো- ১/২০, ১/৮, ১/৬, ১/৫, ১/৪, ১/৩, ১/২, ২/৩।
এই আটটি সংখ্যাকে ধরলে কোরআনে মোট মৌলিক সংখ্যা দ্বারায় ৩৮টি। ৩৮ সংখ্যাটি ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
অর্থাৎ কোরআনে উল্যেখিত মোট সংখ্যার সংখাও ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। যেসব সংখ্যাকে ঐ সংখ্যা ও ১ ব্যাতিত অন্য কোন সংখ্যা দিয়ে ভাগ করা যায় না তাদেরকে প্রাইম নাম্বার বলা হয়।
১৯ একটি প্রাইম নাম্বার। কুরআনে পূর্ণ সংখ্যার সংখ্যা ৩০ টি। আর ৩০ সংখ্যাটি অংকের ১৯ তম নন-প্রাইম সংখ্যা। (৪,৬,৮,৯,১০,১২,১৪,১৫,১৬,১৮,২০,২১,২২,২৪,২৫,২৬,২৭,২৮, ৩০)।
কুরআনে ৮টি দশমিক সংখ্যা আছে। অংকে ৮ নাম্বার প্রাইম নাম্বার হচ্ছে ১৯। গুনে দেখতে পারেন। (২,৩,৫,৭,১১,১৩,১৭, ১৯)।
১৭) ১৯তম অক্ষর ক্বাফ : ক্বাফ অক্ষরটি সংখ্যাগত মানের দিক থেকে আরবী বর্ণমালার ১৯তম অক্ষর। (আলিফ, বা, তা, ছা, জ্বিম, হা, খা, দাল, জাল, রা, ঝা, ছিন, সিন, সোয়াদ, দোয়াদ, ত্বো, জো,
আইন, গইন, ফা, ক্বাফ) যেহেতু ১৯ নাম্বার অক্ষর,
ক. কোরআনের সকল সূরার ১৯ নং আয়াতগুলোতে ক্বাফ অক্ষরটি এসেছে মোট ৭৬ বার। ৭৬ কে ১৯ দ্বারা ভাগ করা যায়। ৭৬/১৯=৪।
খ. কোরআনে যেসব সূরার অবস্থানকে ১৯ দ্বারা ভাগ করা যায়, ঐ সকল সূরায় ক্বাফ এসেছে মোট ২২৮ বার। যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
১৯ ৩৮ ৫৭ ৭৬ ৯৫ ১১৪ মোট ৮৬ ৭৪ ৪৯ ১৫ ৩ ১ ২২৮
১৮) হা-মিম এই দুটি অক্ষর দিয়ে শুরু হয়েছে কোরআনের ৭ টি সূরা।
এগুলো হলো ৪০, ৪১, ৪২, ৪৩, ৪৪, ৪৫ ও ৪৬ নং সূরা।
সূরাগুলোতে হা ও মিম এই অক্ষর দুটি এসেছে এভাবে সূরা নং হা মিম ডিজিট গুলোর যোগফল
মোট ডিজিট ৪০ ৬৪ ৩৮০, ৬+৪+৩+৮+০ ২১ ৪১ ৪৮ ২৭৬ ৪+৮+২+৭+৬ ২৭ ৪২ ৫৩ ৩০০ ৫+৩+৩+০+০ ১১ ৪৩ ৪৪ ৩২৪
৪+৪+৩+২+৪ ১৭ ৪৪ ১৬ ১৫০
১+৬+১+৫+০ ১৩ ৪৫ ৩১ ২০০
৩+১+২+০+০ ৬ ৪৬ ৩৬ ২২৫
৩+৬+২+২+৫ ১৮ মোট ২৯২ ১৮৫৫ ১১৩ মোট হা-মিম =২১৪৭ (১৯*১১৩)!!! মোট ডিজিট =১১৩।
শুধু এই নয়- যদি আমরা সূরাগুলোকে দুটি গ্রুপে ভাগ করি; এভাবে ৪০,৪১,৪২ এক গ্রুপে আর বাকী চারটি আরেক গ্রুপে,
তাহলে প্রতি গ্রুপে হা-মিমের মোট সংখ্যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য পাওয়া যাবে।
আর উপরের মতই ডিজিটগুলোর মোট যোগফল, হা-মিমের মোট সংখ্যাকে ১৯ দিয়ে ভাগ করার পর যা থাকে তার সাথে মিলে যাবে!!!
হা-মিম, ১১২১ (১৯*৫৯) ও ১০২৬ (১৯*৫৪)টি। ডিজিটের যোগফল, ৫৯ ও ৫৪।
রাব্বুল আলামিন তার সব সৃষ্টির মধ্যেই, এরকম সামঞ্জস্য বজায় রেখে সৃষ্টি করেছেন। কেউ কেউ তা চোখ খুলে দেখেনা, ফলে বুঝেনা।
১৯) আল্লাহ পাক কোরআনকে ১৯ সংখ্যাটির গানিতীক কোড দিয়ে সতর্কতার সাথে নাজিল করেছেন। আর দুটি উদাহরণ দেই,ব্যাপারটা পরিষ্কার হবে।
ক. আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বারটি জয়গায় লুত সম্প্রদায়ের কথা উল্যেখ
করেছেন। এবং প্রতিবার তিনি তাদের সম্বোধন করেছেন "কওমে লুত" বলে। কিন্তু সূরা ক্বাফ এর ১৩ নং আয়াতে তিনি লুত সম্প্রদায়ের কথা উল্লেখ
করতে গিয়ে "ইখওয়ানুল লুত: বলেছেন; আর্থের দিকে থেকে উভয়টাই সমান। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা তাহলে কেন এখানে "ক্বওমে লুত" শব্দটি ব্যাবহার করলেন না ?
কারণ এই সূরাতে এখানে "কওমে লুত" ব্যাবহার হলে এই সূরাতে "ক্বাফ" অক্ষরটির সংখ্যা ৫৮ হয়ে যেতো, যেটাকে ১৯ দ্বারা ভাগ করা যায় না।
সে জন্য একই অর্থবোধক "ইয়াখওয়ানুল লুত" ব্যাবহার করে ক্বাফ এর সংখ্যা এই সূরাতে ৫৭ রাখা হয়েছে, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
থ. শুধু ‘ক্বাফ’ অক্ষর দিয়ে শুরু হয়েছে সূরা ‘কাহফ’ , এখানে ক্বাফ অক্ষরটি গণনায় ঠিক রাখার জন্য আল্লাহতায়ালা যে ব্যবস্থা নিয়েছেন তা লক্ষণীয়।
সূরা কাহফের ২৫ নং আয়াতটিতে ৩০৯ বছর বুঝানো হয়েছে এভাবে "তারা গুহার ভিতরে ছিল ৩০০ বছর, আরো ৯ বছর।"
আবার নূহ (আ এর সাথে সম্পর্কিত ৯৫০ সংখ্যাটি বলতে গিয়ে কোরআন ১০০০ ও ৫০ এর সাহায্য নিয়েছে এভাবে "১০০০ থেকে ৫০ বাদ দিলে যা হয়।"
এখন প্রশ্ন হলো আল্লাহ তায়ালা কি পারতেন না, এভাবে প্রকাশ না করে সংখ্যাগুলিকে সরাসরি প্রকাশ করতে ? অথবা কেন তিনি এমন পদ্ধতি ব্যাবহার করলেন ?
কারন ৯৫০ কে সরাসরি "৯৫০" লিখলে বা ৩০৯ কে সরাসরি "৩০৯" এভাবে লিখলে, কোরআনে যে সংখ্যাগুলি পাওয়া যাবে তাদের যোগফলকে ১৯ দ্বারা ভাগ করা যাবে না!
এভাবে কোরআন এর প্রতিটি আয়াত, এমনকি প্রতিটি শব্দ ১৯ এর গানিতিক রহস্যে সাজানো। একটি শব্দের হেরফের করা সম্ভব নয়। কি চমৎকার আর যৌক্তিক মহান প্রভুর নিদর্শণ!
(২০) পবিত্র কোরআন যার নিকট এসেছে তিনি হলেন ‘রসূল’, কোরানে রসূল শব্দটি এসেছে ৫১৩ বার যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
যার বাণী রসূল বহন করে এনেছেন তিনি হলেন ‘রব’ কোরানে এ শব্দটি এসেছে ১৫২ বার,যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
কোরআনের কেন্দ্রীয় দাওয়াত হচ্ছে ‘এবাদত’ কোরআনে এ শব্দটি এসেছে ১৯ বার, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
দাওয়াত এর পরিভাষা হচ্ছে ‘আবদ’, এটিও এসেছে ১৫২ বার, আর যে ব্যক্তি এই ‘আবদ’ এর কাজ করবে তিনি হলেন ‘আবিদ’ কোরানে এটিও এসেছে ১৫২ বার।
আল কোরআনের বিভিন্ন সূরার শুরুতে কিছু বিচিত্র বর্ণমালা ব্যবহিত হয়েছে, এগুলোকে বলা হয় ‘হরুফে মোকাত্তায়াত’ এগুলোর অর্থ আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না,
অবশ্য গবেষণার ফলে এগুলোর একটা গানিতিক রহস্য জানা গেছে। এই মোকাত্তায়াত হরফ গুলো মোট ২৯ টি সূরার শুরুতে ১৪ টি বিভিন্ন বর্ণমালায় ১৪ টি বিভিন্ন পদ্ধতিতে এগুলোকে এ সব জায়গায় বসানো হয়েছে। এদের সম্মিলিত যোগফল হচ্ছে (২৯+১৪+১৪)=৫৭ যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
‘আলিফ-লাম-মীম’ মোকাত্তায়াতটি মোট ৬ টি সূরার শুরুতে ব্যবহিত হয়েছে। এই সূরাগুলোর মধ্যে আলিফ,লাম,মীম বর্ণ তিনটি যতোবার ব্যবহিত হয়েছে, তাদের সমষ্টি ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
(২১) পরিসংখ্যান মিলিয়ে দেখা যাকঃ
সূরা ‘বাকারায়’ ‘আলিফ’ এসেছে ৪৫০২ বার, ‘লাম’ ৩২০২ এবং ‘মীম’ এসেছে ২১৯৫, এ সবগুলোর সমষ্টি দাঁড়ায় ৯৮৯৯, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা ‘আলে ইমরান’ –এ ‘আলিফ’ এসেছে ২৫২১ বার, ‘লাম’ ১৮৯২ এবং ‘মীম’ এসেছে ১২৪৯, এ সবগুলোর সমষ্টি দাঁড়ায় ৫৬৬২, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা ‘আন কাবুত’ –এ ‘আলিফ’ এসেছে ৭৭৪ বার, ‘লাম’ ৫৫৪ এবং ‘মীম’ এসেছে ৩৪৪, এ সবগুলোর সমষ্টি দাঁড়ায় ১৬৭২, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা ‘রোম’ –এ ‘আলিফ’ এসেছে ৫৪৪ বার, ‘লাম’ ৩৯৩ এবং ‘মীম’ এসেছে ৩১৭, এ সবগুলোর সমষ্টি দাঁড়ায় ১২৫৪, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা ‘লোকমান’ –এ ‘আলিফ’ এসেছে ৩৪৭ বার, ‘লাম’ ২৯৭ এবং ‘মীম’ এসেছে ১৭৩, এ সবগুলোর সমষ্টি দাঁড়ায় ৮১৭, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা ‘সাজদায়’ ‘আলিফ’ এসেছে ২৫৭ বার, ‘লাম’ ১৫৫ এবং ‘মীম’ এসেছে ১৫৮, এ সবগুলোর সমষ্টি দাঁড়ায় ৫৭০, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। আবার এই সূরাগুলোর অক্ষরগুলো গুনলে দেখা যাবে মোট ‘আলিফ’ এসেছে ৮৯৪৫ বার, মোট ‘লাম’ ৬৪৯৩ এবং মোট ‘মীম’ এসেছে ৪৪৩৬, এ সবগুলোর সমষ্টি দাঁড়ায় ১৯৮৭৪, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা ‘মারইয়াম’ এর মোকাত্তায়াত গঠিত হয়েছে পাঁচটি ভিন্ন ধরনের বর্ণ দিয়ে, এগুলো হল , ক্বাফ, হা, ইয়া,আইন,ছোয়াদ। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে এ সূরায়ঃ ‘ক্বাফ’ এসেছে ১৩৭ বার, ‘হা’ এসেছে ১৭৫ বার, ‘ইয়া’ এসেছে ৩৪৩ বার, আইন এসেছে ১১৭ বার, সোয়াদ এসেছে ২৬ বার,এই পাঁচটি হরফের মোট যোগফল (১৩৭+১৭৫+৩৪৩+১১৭+২৬)= ৭৯৮, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা ‘আ’রাফ’-এর মোকাত্তায়াত হচ্ছে ‘আলিফ’, ‘লাম’, ‘মীম’, ‘সোয়াদ’। এই সূরাটিতে ‘আলিফ’ এসেছে ২৫২৯ বার। ‘লাম’ এসেছে ১৫৩০ বার। ‘মীম’ ব্যবহিত হয়েছে ১১৬৪ বার। ‘সোয়াদ’ এসেছে ৯৭ বার। মোকাত্তায়াত চারটির যোগফল (২৫২৯+১৫৩০+১১৬৪+৯৭)= ৫৩২০, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা ‘ইয়াসীন’ এর মোকাত্তায়াত হচ্ছে ‘ইয়া’ এবং ‘সীন’। সূরাটিতে এই দুটি অক্ষর ব্যবহিত হয়েছে ২৮৫ বার, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা ‘মোমেন’ থেকে ‘সূরা’ ‘আহক্বাফ’ পর্যন্ত এই সাতটি সূরার শুরুতে রয়েছে একই মোকাত্তায়াত – ‘হা’ এবং ‘মীম’। ধারাবাহিক ভাবে এ সাতটি সূরায় ‘হা’ এবং ‘মীম’ এ দুটি অক্ষর মোট ২১৪৭ বার ব্যবহিত হয়েছে, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা ‘ইউনুস’ এবং সূরা ‘হুদ’ শুরু হয়েছে ‘আলিফ’ ‘লাম’, ‘রা’ এই মোকাত্তায়াত দিয়ে ।সূরা দুটিতে হরফ তিনটি ব্যবহিত হয়েছে ২৮৮৯ বার , এটি ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা ‘ইউসূফ’, সূরা ‘ইবরাহীম’ এবং সূরা ‘আল হেজর্’ এ একই মোকাত্তায়াত রয়েছে অর্থাৎ ‘আলিফ’ ‘লাম’, ‘রা’।
সূরা ‘ইউসূফ’ এ হরফগুলো এসেছে ২৩৭৫ বার, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা ‘ইবরাহীম’ এ হরফগুলো এসেছে ১১৯৭ বার, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা ‘আল হেজর্’এ হরফগুলো এসেছে ৯১২ বার, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
মোকাত্তায়াত সম্বলিত সর্বশেষ সূরা হচ্ছে সূরা ‘আল কালাম’। এর শুরুতে মাত্র একটি হরফ বিশিষ্ট মোকাত্তায়াত ব্যবহিত হয়েছে, সেটি হচ্ছে ‘নূন’ , এ সূরায় এ অক্ষরটি এসেছে ১৩৩ বার যা অবশ্যই ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
১৯ এর এতোসব প্রয়োগ দেখে হয়তো আপনার জানতে ইচ্ছে করছে, এটার কি দরকার ছিল অথবা কোরআনের বাহ্যিক অবস্থানের সাথে এর সম্পর্ক কি। উত্তরটা সহজ।
কোরআনকে যে কোন ধরনের বিকৃতি থেকে রক্ষা করা। আজ সারা পৃথিবীর প্রতিটা মুসলমানের ঘরে কোরআন আছে। এই কিতাব যেহেতু একটা ধর্মগ্রন্থ তাই এটা অবিকৃতির সাথে সবার ঘরে শোভা পাবে এটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু ইসলামের শত্রুরা বসে নেই। তারা চেষ্টা করে যাচ্ছে অবিরাম, কোরআনকে বিকৃত বইয়ের গাদায় ফেলতে। কোরআনকে কেউ যদি বিকৃত করার চেষ্টা করে তা এখন ধরা সম্ভব, ১৯ এর ম্যাথমেটিক্যাল কোড দিয়ে।
মহান আল্লাহ এটাকে এমন একটা রক্ষাকবচ বানিয়ে দিয়েছেন, যেটা কোন মানব মস্তিস্ক চিন্তা করারও শক্তি রাখে না।
কুরআনে ১৯ এর এই অলৌকিক ভারসাম্যকে যদি কেউ বুঝে, সে স্বীকার করতে বাধ্য হবে এটা এমন একটা বই যেটার মত লেখা, মানুষের ক্ষমতা ও শক্তির বাহিরে। এর পিছনে হাত আছে এক মহান শক্তির।
আর বইটির মালিক বলেই দিয়েছেন- "বলূন: যদি সকল মানব আর জ্বীন মিলে, এই কোরআনের অনুরুপ রচনা আনয়ন করার জন্য জড়ো হয় এবং তারা পরস্পরকে সাহায্যও করে; তবুও তারা কখনো এর অনুরুপ কিছু আনতে পারবে না।
(সূরা বনী ইসরাইল"৮৮)।
আল্লাহ আমাদের কুরআন নিয়ে গবেষনা করার তৌফিক দান করুন আমিন ।
আল্লাহুম্মা ছাল্লে আলা মোহাম্মাদ ওয়ালা আলে মোহাম্মাদ
"সেখানে (জাহান্নামে) নিয়োজিত আছে উনিশ জন ফেরেশতা।
আমি ফেরেশতাদেরকে জাহান্নামের প্রহরী রেখেছি কাফিরদের পরীক্ষার জন্য আমি তাদের এই সংখ্যা উল্লেখ করেছি যাতে আহলে কিতাবের দৃঢ় বিশ্বাস জন্মে ঈমানদারদের ঈমান বর্ধিত হয় এবং বিশ্বাসীগন এবং আহলে কিতাব যেন সন্দেহ পোষন না করে । এর ফলে যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে তারা ও কাফিররা বলবেঃ আল্লাহ এ বর্ণনা দ্বারা কি বুঝাতে চেয়েছেন ? এইভাবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা হেদায়েত দান করেন। তোমার প্রতিপালকের বাহীনি সম্পর্কে একমাত্র তিনিই জানেন। এই বর্ণনা তো সমস্ত মানুষের জন্য নিছক উপদেশ ।
(সূরা মুদ্দাসসির : ৩০,৩১)
এই আয়াতে বলা হচ্ছে জাহান্নামের আগুন নিয়ন্ত্রনের জন্যে ১৯ জন ফেরেশ্তা রাখা হয়েছে। আর তাদের সংখ্যাকে কাফেরদের পরিক্ষা করার জন্য নিধারণ করা হয়েছে।
একই সাথে কিতাবীদের বিশ্বাস দৃঢ় করতে আর মুমিনদের ইমান বৃদ্ধির কাজেও লাগবে । তার মানে এখানে ১৯ সংখ্যা দিয়ে আল্লাহ কিতাবীদের ঈমান বৃদ্ধি করেছেন ।
মিশরের খ্যাতনামা বিজ্ঞানী ড. রশিদ কোরআন নিয়ে এক ব্যাপক গবেষণা চালিয়েছেন। তিনি প্রাথমিকভাবে কোরআনের প্রতিটি অক্ষর যেভাবে কোরআনে সন্নিবেশিত আছে সেভাবেই তাকে কম্পিউটারে বিন্যস্ত করেন।
কোরআনে ১১৪ টি সূরার অবস্থান এবং ২৯ টি সূরার শুরুতে ব্যবহিত ‘হরুফে মোকাত্তায়াত’ যে নিয়মে বিন্যস্ত আছে সে নিয়মের ভিত্তিতে তিনি হিসাব করতে শুরু করেন। এতে করে কোরআনের কিছু অলৌকিক তত্ত্ব তাঁর কম্পিউটার স্ক্রীনে ভেসে উঠে। এ অলৌকিক তত্ত্বের একটি হচ্ছে যে, সমস্ত কোরআন গনিতের এক রহস্যময় বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আছে।
কোরআনের সর্বত্র একটি বিস্ময়কর গানিতিক সংখ্যার জাল বোনা রয়েছে। আল্লাহ সংখ্যার মাধ্যমে আল কুরআনকে এমন এক গানিতিক ফর্মুলায় সাজিয়ে রেখেছেন যেন এতে ব্যবহৃত বর্ণমালা , শব্দ ও আয়াতসমূহের কোনোরকম পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোজন এবং বিয়োজন কারো পক্ষে সম্ভব না হয়।
সমগ্র কোরআন যেন ১৯ সংখ্যাটিরই একটি সুদৃঢ় বন্ধন। এই ফর্মুলাটি তৈরি হয়েছে ১৯ সংখ্যাটির গানিতিক অবস্থান দিয়ে।
১)
(ক) ১৯৭৪ সালে প্রথম আবিস্কৃত হয় যে, কোরআনের প্রতিটি সূরা, প্রতিটি আয়াত, এমনকি প্রতিটি শব্দ ১৯ সংখ্যার সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত।
আরো ব্যপক গবেষণার ফলে ফলাফল এখন এমন পর্যায়ে এসেছে যে, যে কেউ সামান্য গুন, ভাগ বুঝতে পারলে, কোরআনে ১৯ এর প্রয়োগ বুঝতে পারবে।
এসব গবেষণার ফল আমাদেরকে স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, এই কিতাবটিতে ১৯ সংখ্যাটিকে একটি গানিতিক কোড হিসেবে ব্যাবহার করা হয়েছে। যা কিতাবটিকে সুরক্ষিত করেছে। আল্লাহ পরম কৌশলী ।
(খ) কোরআন যে ১৯ সংখ্যার গানিতীক কোড দিয়ে সাজানো প্রথম আবিষ্কৃত হয় ১৯৭৪ সালে। আরবী "মুদ্দাসসির" শব্দটির অর্থ "লুকায়িত" বা গোপন।
সূরা মুদ্দাসসির কোরআনের ৭৪ তম সূরা, আর এই সূরাতেই ১৯ সংখ্যাটির প্রয়োগ উল্লেখ করে একটি আয়াত (৩০ নং) আছে।
কথা হচ্ছে, যখন আমরা আবিষ্কৃত ১৯ আর সূরা মুদ্দাসসির এর কোরআনে অবস্থান ৭৪ কে পাশাপাশি বসাই, তখন যে সংখ্যাটি পাওয়া যায় তা হলো ১৯৭৪,
যা যে সালে বিষয়টি আবিষ্কার হয়েছে তার সমান। হযরত ইসা (আ এর জন্মের পর ১৯৭৪ বছর ধরে একটা গোপন রহস্য মানবজাতীর জ্ঞানচক্ষুর আড়ালে রেখে দিয়েছিলেন মহাশক্তিশালী বিচার দিনের মালিক, কি মহামহিম তিনি ।
১৯৭৪ সালটি যখন দুনিয়াতে চলছিল, তখন দুনিয়াতে হিজরী সাল চলছিল ১৩৯৩ সাল। কোরআন প্রথম নাজিল হওয়া শুরু হয় হিজরতের ১৩ বছর আগে। এই তের বছর ১৩৯৩ এর সাথে যোগ করলে মোট দাড়ায় ১৪০৯ বছর।
অর্থাৎ কোরআন নাজিলের শরু থেকে শুরু করে মোট ১৪০৯ বছর পর কোরাআনের একটা "মুদ্দাসসির" বা "গোপন" রহস্য উন্মোচিত হয়।
১৪০৯ ?? এটার আবার গুরুত্ব কি ? হুম দেখুন---- ১৯ কে ৭৪ দিয়ে গুন করলে ১৪০৯ হয়ে যায় যে! ১৯*৭৪=১৪০৯।
(গ) এই সূরার প্রথম দুই আয়াত এরকম
১. হে চাদরাবৃত ২. উঠুন সতর্ক করুন। এই দুই আয়াতে মোট অক্ষর এর সংখ্যা ১৯ টি।
আর আয়াতদুটির মোট সংখ্যাগত মান হিসাব করলে তা দ্বারায় ১৯৭৪! সতর্ক কেন করতে বলেছেন তিনি, বুঝেছেন ?
আয়াত দুটি হল, ইয়া আইয়্যুহাল মুদ্দাসসির, কুম ফাআনযির।
ইয়া=১০, আলিফ=১, আলিফ=১, ইয়া=১০, আলিফ=১, আলিফ=১, লাম=৩০, মিম=৪০, দাল=৪, ছা=৫০০, র=২০০, ক্বাফ=১০০, মিম=৪০, ফা=৮০, আলিফ=১, নুন=৫০, যাল=৭০০, র=২০০
মোট মান যোগফল=১৯৭৪। সুবহানাআল্লাহ---তিনি কত মহান--!
সূরাটি ৭৪ নং সূরা, মুদ্দাসসির শব্দটা আছে ১ নং আয়াতে। সুতরাং ১ নং আয়াতকে কোথাও রেফার করা হয় (৭৪,১) লিখে। কমা ছারা সংখ্যাটি ৭৪১,
এই ১ নং আয়াতটি থেকে শুরু করে , কোরআনের সর্বশেষ আয়াত পর্যন্ত গননা করলে মোট ৭৪১ টা আয়াত পাওয়া যায়। ৭৪১ আক্ষরটাও ১৯ দ্বারা বিভাজ্য (১৯*৩৯=৭৪১)।
(ঘ) সূরাটিতে অগ্নি অর্থে "সাকার" শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে ২৬, ২৭ ও ৪২ নং আয়াতে।
যেগুলোতে বলা হচ্ছে, যারা সুস্পষ্ট নিদর্শন দেখার পরও, কোরআনকে মানুষের উক্তি বলবে, তাদেরকে সাকার বা অগ্নিতে নিক্ষেপ করা হবে।
এখন ২৬+২৭+৪২=৯৫, লক্ষনীয় ১৯*৫=৯৫। এই ২৬, ২৭ ও ৪২ নং আয়াত তিনটির সংখ্যাগত মান (৫৫৬,৬৮৩,৬৬১) একত্রে যোগ করলে পাওয়া যায় ১৯০০, লক্ষনীয় ১৯*১০০=১৯০০।
আরো অবাক ব্যাপারটা হলো, যদি আমরা এই তিনটি আয়াতের সংখ্যাগত মানের সাথে, কোরআনের সূরাটির অবস্থান (৭৪) কে যোগ করি তাহলে আমরা সেই সালকে পাব যে সালে ১৯ এর রহস্য আবিষ্কার করা হয় ১৯৭৪ ।
(ঙ) যে সূরাতে এতোকিছুকে গোপন করে রাখা হয়েছে, তার নাম মুদ্দাসসির কেন দেয়া হলো, এবার বুঝতে পেরেছি!
আপনি যদি সূরা মুদ্দাসসির পরেন, তাহলে দেখবেন, এই সূরাটির ১ টি আয়াত বাদে বাকি সব আয়াতগুলো খুব ছোট ছোট।
আর এই অস্বাভাবিক আয়াতটা হচ্ছে সূরাটির ৩১ নং আয়াত। একমাত্র এই আয়াতেই ১৯ এর কার্যকারিতা সম্বন্ধে বলা হয়েছে।
সূরাটর ১ টি আয়াতে গড়ে যতগুলো অক্ষর এসেছে, তার ১২ গুন অক্ষর এসেছে এই ৩১ নং আয়াতে।
উল্লেখ্য কোরআনের সবচেয়ে বড় আয়াত, সূরা বাকারার ২৮২ নং আয়াত।
সূরা বাকারাতে একটি আয়াতে গড়ে যতগুলো অক্ষর এসেছে, তার সমান ৬ গুন অক্ষর এসেছে ২৮২ নং আয়াতটিতে।
অর্থাৎ গড় অনুপাতের দিকে বিবেচনা করলে মুদ্দাসসির এর ৩১ নং আয়াতটি বাকারার ২৮২ নং আয়াতেরও ২ গুন। এই আয়াতটিতেই যেহেতু এসেছে ১৯ সংখ্যাটির কথা,
তাই নিশ্চয়ই আয়াতটির মধ্যে ১৯ এর রহস্য লুকানো আছে ! আছে কি ? আয়াতটিতে মোট ৫৭ টি শব্দ আছে। ১৯*৩=৫৭।
আবার আয়াতটির যে বাক্যটিতে ১৯ অক্ষর আছে তাতে ৩ টি শব্দ আছে। ৩ এর একটা অর্থ আছে এখানে। তা হলো এই আয়াতে শব্দ সংখ্যা ৫৭, যেটা ১৯ কে ৩ দিয়ে গুন করে পাওয়া যায়।
আয়াতটির একটা বাক্য হলো,
"--------- আল্লাহ এর দ্বারা কি বুঝাতে চেয়েছেন?" এই বাক্যটিতে মোট ১৯ টা শব্দ আছে। আর আয়াতটির প্রথম থেকে এই আয়াত পর্যন্ত শব্দ সংখ্যা ৩৮ টি।
লক্ষনীয়, ১৯*২=৩৮। আরো লক্ষনীয় এই বাক্যটির পরের বাক্যগুলোতে মোট ১৯ টা শব্দ আছে।
(চ) প্রথম থেকে শুরু করে এই অস্বাভাবিক বড় আয়াতটি পর্যন্ত মোট আয়াত ৩০ টি। এই ৩০ টি আয়াতে মোট শব্দ সংখ্যা ৯৫ টি । লক্ষনীয, ১৯*৫=৯৫।
প্রথম থেকে শুরু করে এই আয়াতে উল্লেখিত "উনিশ" শব্দটি পর্যন্ত মোট ৩৬১ টি অক্ষর আছে। ৩৬১ কে ১৯ দিয়ে ভাগ করলে ১৯ পাওয়া যায়। (১৯*১৯=৩৬১)।
সূরাটির প্রথম থেকে উনিশতম আয়াত পর্যন্ত শব্দ সংখ্যা ৫৭ টি। ১৯*৩=৫৭।
সূরাটিতে ক্রমিক নম্বর সহ আয়াত আছে মোট ৫৬টা। আর ক্রমিক নম্বর ছারা বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম আয়াতটি আছে সূরার শুরুতে। তাহলে মোট আয়াত ৫৬+১=৫৭। লক্ষনীয় ১৯*৩=৫৭।
রাব্বুল আলামীন নিশ্চয়ই বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম কে "মুদ্দসসির" (গোপন) রেখেছেন সূরাটির নামটিকে শিল্পোত্তির্ণ করতে!
২) "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম"
ক. ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ এই ক্ষুদ্র আয়াতটি ৪টি শব্দ এবং ১৯ টি অক্ষর দ্বারা গঠিত। কোরআনে মোট ১১৪ বার এই আয়াত এসেছে। যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য
খ. এই আয়াতে মোট চারটি শব্দ আছে। ইসম, আল্লাহ, রহমান ও রহীম। ইস্ম অর্থ নাম, আল্লাহ হচ্ছে স্রষ্টার মূল নাম, রহমান অর্থ দাতা, রহীম অর্থ করুণাময়।
এই চারটি শব্দ কোরআনে যতবার করে এসেছে সেই সংখ্যাগুলো ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
ইসম ১৯ বার এসেছে; যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। ১৯/১৯=১ ।
আল্লাহ - ২৬৯৮ বার এসেছে; যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। ২৬৯৮/১৯=১৪২ ।
রহমান - ৫৭ বার এসেছে; যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। ৫৭/১৯=৩ ।
রহীম - ১১৪ বার এসেছে; যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। ১১৪/১৯=৬ ।
এমনকি ১৯ দিয়ে ভাগ করার পর যে সংখ্যাগুলো পাওয়া গেলো এদের যোগফলও ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। (১+১৪২+৩+৬) = ১৫২/১৯=৮ ।
গ. কোরআনে এই চারটি শব্দের অন্তত একটি শব্দ আছে এরকম আয়াতের সংখ্যা কত ? এরকম আয়াতের সংখ্যা ১৯১৯!!! যা নি:সন্দেহে ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
ঘ. ইসম শব্দটির অর্থ নাম। বাকি তিনটি শব্দ আল্লাহ তায়ালার পবিত্র নাম। এই তিনটি শব্দের সংখ্যাগত মানের যোগফলও ১৯ দ্বারা বিভাজ্য!
আল্লাহ (৬৬) + রহমান (৩২৯) + রহীম (২৮৯) = ৬৮৪। ৬৮৪/১৯=৩৬ ।
ঙ. হরুফে মুকাত্তায়াত সম্বলিত সূরাগুলোর মধ্যে এই চারটি শব্দ এসেছে মোট ১২৯২ বার। সংখ্যাটি ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
ইসেম ৩১ বার + আল্লাহ ১১২১ বার+রহমান ৬৬ বার + রহীম ৭৪ বার =১২৯২ বার। ১২৯২/১৯=৬৮ ।
চ. "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" বাক্যটির চারটি শব্দ কোরআনে যতবার যে সংখ্যায় এসেছে, শব্দগুলোর অপরিহার্য গুণবাচক শব্দটিও ঠিক ততবার করে এসেছে।
ইসম এর অপরিহার্য গুনবাচক শব্দ "হয়াহেদ" এসেছে ১৯ বার।
আল্লাহ এর অপরিহার্য গুনবাচক শব্দ "যুল ফাদল" এসেছে ২৬৯৮ বার।
রহমান এর অপরিহার্য গুনবাচক শব্দ "মাজিদ" এসেছে ৫৭ বার।
রহীম এর অপরিহার্য গুনবাচক শব্দ "জামেউ" এসেছে ১১৪ বার।
ছ. "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" আয়াতটিতে ব্যবহৃত ১৯ টি সংখ্যামানের সমষ্টি যা হল ৭৮৬, আয়াতটিতে একই অক্ষরের পুনরাবৃত্তি বাদ দিলে মৌলিক অক্ষর থাকে মোট ১০ টি।
আয়াতটিতে পুনরাবৃত্তি অক্ষরগুলোর সংখ্যামান ৪০৬। ৭৮৬ থেকে ৪০৬ বাদ দিলে থাকে ৩৮০। যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
জ. সূরা তওবা "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" দিয়ে শুরু হয়নি। অন্যদিকে সূরা নামলে এই বাক্যটি ২ বার এসেছে। ফলে বাক্যটির মোট রিপিটেসন ১১৪ হয়েছে। যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
একইসাথে সুরা তওবা থেকে সূরা নামল পর্যন্ত মোট সূরা সংখ্যা ১৯।
ঝ. সূরা নামল কোরআনের ২৭ নং সূরা। এই সূরার শুরুতে একবার এবং ৩০ নং আয়াতে একবার "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" বাক্যটি এসেছে।
৩০ তম সংখ্যাটি ১৯ তম নন প্রাইম সংখ্যা। (৪,৬,৮,৯,১০,১২,১৪,১৫,১৬,১৮,২০,২১,২২,২৪,২৫,২৬,২৭,২৮, ৩০)।
প্রথমে "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" আছে ১১৩ টি সূরাতে। ১১৩ সংখ্যাটি অংকের ৩০ তম প্রাইম নাম্বার!
ঞ. যদি আমরা যোগ করি সূরা নামলের ক্রমিক নং (২৭) এবং রিপিট হওয়া "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" এর আয়াত নাম্বার (৩০),
তাহলে যোগফল হবে ৫৭ ! যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
ট. ৯ নং সূরা (সূরা তওবা) তে "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" নাই। ২৭ নং সূরাতে আছে দুই বার।
যদি আমরা যোগ করি ৯ নং থেকে ২৭ নং সূরা পর্যন্ত, সূরার ক্রমিক নং গুলো (৯+১০+১১+.......+২৭) তাহলে যোগফল পাব ৩৪২। ৩৪২ সংখ্যাটি ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
২৭ নং সূরাটির ৩০ নং আয়াত যেখানে রিপিটেড "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" পাওয়া গেছে, সূরাটির প্রথম শব্দ থেকে রিপিটেড বিসমিল্লাহ শব্দ পর্যন্ত মোট শব্দ আছে ৩৪২ টি।
৯ নং সূরার প্রথম থেকে শুরু করে ২৭ নং সূরার রিপিটেড "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" পর্যন্ত মোট আয়াত সংখ্যা ৩৪২ টি।
এই পরিসংখ্যানগুলোর একটার সাথে আরেকটার গণনায় বাহ্যিক কোন সম্পর্ক নেই, অথচ এরা কি সামঞ্জস্যতার সাথে ঘোষণা দিচ্ছে রিপিটেড ও মিসিং "বিসমিল্লাহির
রাহমানির রাহিম" আয়াতটির অবস্থানগত কারনের!
ঠ. এবার আমরা একটু অন্যভাবে পরিক্ষা করবো কোরআনকে।
আমরা সুরা নামলের ৩০ নং আয়াতকে মধ্য আয়াত ধরে (যে আয়াতে মিসিং "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" পাওয়া গেছে) কোরআনকে দুই ভাগ করে ফেলব।
ভাগ করার পর দেখা যাবে, প্রথম ভাগে ইসেম+আল্লাহ+রহমান+রহীম শব্দের মোট সংখ্যাকে ১৯ দ্বারা ভাগ করা যাবে। এমনকি দ্বিতীয় ভাগেরটাও।
দুইভাগ করার পর,
প্রথম ভাগে শব্দের সংখ্যা : ইসেম - ৯, আল্লাহ - ১৮১৪, রহমান - ৩৫, রহীম - ৮০ মোট ১৯৩৮ =১৯*১০২।
দ্বিতীয় ভাগে শব্দের সংখ্যা : ইসেম - ১০, আল্লাহ - ৮৮৪, রহমান - ২২, রহীম - ৩৪ মোট ৯৫০ =১৯*৫০।
৩) কোরআনে মোট ১১৪ টি সূরা আছে। ১১৪ সংখ্যাটি ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। ১১৪/১৯=৬ ।
৪) কোরআনে বর্ণিত আল্লাহতায়ালার সর্বমোট নামের সংখ্যা (মূল ও গুনবাচক মিলে) ১১৪ বার, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
৫) সূরা ‘আলাক’ এর প্রথম পাঁচ আয়াত দ্বারা দুনিয়ার বুকে আল কোরআন নাযিল শুরু হয়।
**এই পাঁচ আয়াতে রয়েছে ১৯ টি শব্দ।
**এই পাঁচ আয়াতে অক্ষর রয়েছে ৭৬ টি , ৭৬ শব্দটিও ১৯ দ্বারা নি:শেষে বিভাজ্য। ৭৬/১৯=৪ ।
**এই পাঁচ আয়াত সহ সূরা ‘আলাক’ এর মোট আয়াত সংখ্যা ১৯।
**এই ১৯ টি আয়াতে অক্ষর রয়েছে ২৮৫ টি , যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। ২৮৫/১৯=১৫ ।
**পবিত্র কোরআনের শেষের দিক থেকে কেউ যদি গুনতে শুরু করে তাহলে ১১৪ থেকে ৯৬ পর্যন্ত গুনে আসলে দেখা যাবে পিছন থেকে ১৯ নং সূরাটি হচ্ছে সূরা ‘আলাক’
৬) প্রথম ওহী সূরা আলাকের প্রথম পাচটি আয়াতের শব্দসংখ্যার মতই কোরআনের আরো বহু পরিসংখ্যান ১৯ দিয়ে ভাগ করা যায়।
কোরআন যিনি নিয়ে এসেছেন তিনি রাসূল। রাসূল শব্দটি এসেছে- ৫১৩ বার।
যার বানি রাসূল নিয়ে এসেছেন তিনি রব। রব শব্দটি এসেছে- ১৫২ বার।
কোরআনের কেন্দ্রীয় বানি হচ্ছে ইবাদাত। ইবাদাত শব্দটি এসেছে- ১৯ বার।
কেন্দ্রীয় বানির অপর পরিভাষা হচ্ছে আবদ। আবদ শব্দটিও এসেছে- ১৫২ বার।
আবদ এর কাজ যে করবে তাকে বলে আবীদ। আবিদ শব্দটিও এসেছে- ১৫২ বার।
এ সব কটি পরিসখ্যানই ১৯ দিয়ে ভাগ করা যায়।
৭) সূরা মুদদাসসির এর ৩০ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, "এর উপর রয়েছে ১৯" যা আমি শুরুতে একবার বলেছি।
ঘটনা তা না, ঘটনা হল- আল্লাহ তায়ালা সূরা মুদদাসসির এর ৩০ নং আয়াতটি নাযিলের পর একটু বিরতি দিয়ে সুরা আলাকের বাকি ১৪ টি আয়াত নাযিল করেন।
এর ফলে পুর্বে নাযিলকৃত ৫ আয়াত সহ, গোটা সূরা আলাকের আয়াত দাড়ালো ১৯ ।
সূরাটিতে ১৯ এর যে আকষ্যিক কোন কারিসমা রচিত হয় নি, বরং এর পিছনে রয়েছে আল্লাহ তায়ালার সূক্ষ ইচ্ছা তা এই ঘটনার রহস্য বুঝে বুদ্ধিমানরা সহযেই আন্দাজ করতে পারবেন।
৮) কোরআনে "সংখ্যা" এর উল্লেখ আছে ২৮৫ বার। যা ১৯ দ্বারা বিভায্য। আবার কোরআনে যে সংখ্যাগুলো উল্লেখ আছে তাদের যোগফল করলে দাড়ায় ১৭৪৫৯১, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
৯) কোরআনের সর্বশেষ সূরাটি হল সূরা আন-নাস। এটি ১১৪ তম সূরা। এ সূরার শব্দ সংখ্যা হল ১৯। আর এই ১৯ টি শব্দে আছে মোট ৬ টি আয়াত। ১৯*৬=১১৪।
১০. কুরআনে বর্ণিত আল্লাহ তায়ালার সর্বোমোট নামের সংখ্যা ১১৪ টি (মূল ও গুনবাচক মিলে), যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
১১) কোরআনে বিভিন্ন সূরা শুরু হয়েছে বিচিত্র কিছু বর্ণমালা দিয়ে। এগুলোর কোন অর্থ কেউ এখনো বের করতে পারেনি। এগুলোকে বলা হয় "হরুফে মুকাত্তায়াত"।
যেমন আলিফ-লাম-মিম, হা-ত্বোয়া-সিন ইত্যাদি।
ক. হরুফে মুকাত্তায়াত আছে ২৯ টি সূরার শুরুতে। হরুফে মুকাত্তায়াত মোট ১৪ টি মৌলিক বর্ণ সমাহারে গঠিত। ১৪ টি বিভিন্ন সমাহারে এই বর্ণগুলো ব্যবহৃত হয়েছে।
এদের যোগফল ২৯+১৪+১৪=৫৭, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
খ. "আলিফ-লাম-মিম" এই হরুফে মুকাত্তায়াতটি ব্যবহৃত হয়েছে ৬ টি সূরার শুরুতে।
সূরা বাকারা, সূরা আল-ইমরান, সূরা আনকাবুত, সূরা রুম, সূরা লুকমান, ও সূরা সাজদায়।
সূরা বাকারা : আলিফ-৪৫০২ লাম-৩২০২ মিম-২১৯৫ মোট- ৯৮৯৯ বার। যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা আল ইমরান : আলিফ-২৫২১ লাম-১৮৯২ মিম-১২৪৯ মোট-৫৬৬২ বার। যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা আনকাবুত : আলিফ-৭৭৪ লাম-৫৫৪ মিম-৩৪৪ মোট- ১৬৭২ বার। যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা রুম : আলিফ-৫৪৪ লাম-৩৯৩ মিম-৩১৭ মোট- ১২৫৪ বার। যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা লূকমান : আলিফ-৩৪৭ লাম-২৯৭ মিম-১৭৩ মোট-৮১৭ বার। যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা সাজদা : আলিফ-২৫৭ লাম-১৫৫ মিম-১৫৮ মোট- ৫৭০ বার। যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
উল্লেখিত ছয়টি সূরাতে আলিফ মোট ৮৯৪৫ বার, লাম মোট ৬৪৯৩ বার, মিম মোট ৪৪৩৬ বার এসেছে। এদের মোট যোগফল ১৯৮৭৪, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
গ. সূরা মারইয়াম এর হরুফে মুকাত্তায়াত : ক্বাফ, হা, ইয়া, আইন, সোয়াদ। এ সূরায় ক্বাফ-১৩৭ বার, হা-১৭৫ বার, ইয়া-৩৪৩ বার, আইন-১১৭ বার, সোয়াদ- ২৬ বার করে এসেছে। এদের যোগফল- ৭৯৮, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
ঘ. সূরা আরাফ এর হরুফে মুকাত্তায়াত : আলিফ, লাম, মিম, সোয়াদ। এ সূরায় আলিফ ২৫২৯ বার, লাম ১৫৩০ বার, মিম ১১৬৪ বার, সোয়াদ ৯৭ বার করে এসেছে। এদের যোগফল- ৫৩২০, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
ঙ. সূরা মুমিন থেকে সূরা আহক্বাফ পর্যন্ত ৭ টি সূরার শুরুতে রয়েছে একই হরুফে মুকাত্তায়াত; হা-মিম। এ সাতটি সূরায় হা ও মিম এই অক্ষরগুলো যতবার ব্যাবহার হয়েছে তার যোগফল ২১৪৭। এ সংখ্যাটিও ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
চ. সূরা ইউসুফ, সূরা ইব্রাহীম ও সূরা হেজর এর হরুফে মুকাত্তায়াত হচ্ছে আলিফ-লাম-রা।
সূরা ইউসুফ এ আলিফ-লাম-রা এসেছে মোট ২৩৭৫ বার। যা ১৯ দ্বারা বিভায্য।
সূরা ইব্রাহীম এ আলিফ-লাম-রা অক্ষরগুলো এসেছে ১১৯৭ বার। যা ১৯ দ্বারা বিভায্য।
সূরা হেজর এ আলিফ-লাম-রা অক্ষরগুলো এসেছে ৯১২ বার। যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
এছাড়া সূরা ইউনুস ও সূরা হুদ শুরু হয়েছে আলিফ-লাম-রা দিয়ে। এ দুটি সূরাতে এই আক্ষরগুলো ব্যবহৃত হয়েছে মোট ২৮৮৯ বার। এ সংখ্যাটি ও ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
ছ. সূরা রাদ শুরু হয়েছে আলিফ-লাম-রা এই অক্ষর ৪টি দিয়ে। এই সূরাতে এই চারটি অক্ষর এসেছে মোট- ১৪৮২ বার; যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
জ. হরুফে মুকাত্তায়াত সম্বলিত সর্বশেষ সূরা হচ্ছে সূরা কালাম। এই সূরার শুরু মাত্র একটি অক্ষর দিয়ে-নুন। এই সূরাটিতে নুন অক্ষরটি এসেছে ১৩৩ বার, এটিও নি:সন্দেহে ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
১২) আল্লাহ শব্দটি কুরআনে এসেছে ২৬৯৮ বার, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। ১৯*১৪২=২৬৯৮।
এখানে ১৪২ সংখ্যাটির একটি তাৎপর্য খুজে পাওয়া গেছে। কোরআনের কিছু সূরার প্রথম আয়াতে "আল্লাহ" শব্দটি এসেছে।
প্রথম আয়াতে শব্দটি এসেছে মোট ৪২ বার। এখন এই ৪২ এর সামনে আল্লাহ শব্দটির অত্যাবশ্যকীয় গুনবাচক সংখ্যা ১ বসিয়ে দিলে, পাওয়া যায় ১৪২ ।
২৬৯৮ সংখ্যাটিরও একটা সুন্দর তাৎপর্য আছে। আল্লাহ তায়ালার সবচেয়ে বড় নাম হলো 'যুল ফাদল আল-আজিম'। এই নামটির সংখ্যাগত মান ২৬৯৮ ।
যে আয়াতগুলোতে "আল্লাহ" শব্দটি এসেছে, তাদের ক্রমিক নাম্বারগুলো একত্র যোগ করলে পাওয়া যায় ১১৮১২৩, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। ১৯*৬২১৭ ।
প্রথম হরুফে মুকাত্তায়াত "আলিফ-লাম-মিম" আছে ২ নং সূরায়, আর শেষ হরুফে মুকাত্তায়াত "নুন" আছে ৬৮ নং সূরায়।
২ নং থেকে ৬৮ নং সূরা পর্যন্ত "আল্লাহ" শব্দটি এসেছে ২৬৪১ বার। যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
আর বাকি কোরআন জুড়ে শব্দটি এসেছে ৫৭ বার। এটাও ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
১৩) সূরা ইয়াসিনে "ইয়া" হরফটি আছে ২৩৭ বার। আর "ছিন" হরফটি আছে ৪৮ বার। উভয়ের সমষ্টি ২৮৫, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। ২৮৫/১৯=১৫।
১৪) সূরা ত্বহা এর মধ্যে "ত্ব" হরফটি আছে ২৮ বার আর "হা" হরফটি আছে ৩১৪ বার। উভয়ের সমষ্টি ৩৪২, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। ৩৪২/১৯=১৮।
১৫) "হিসাব" শব্দের হিসাব : "যাতে আল্লাহ জেনে নেন যে, রাসূলগণ তাদের পালনকর্তার পয়গাম পৌছিয়েছেন কিনা। আল্লাহর সবকিছুর সংখ্যার হিসাব রাখেন"। (সূরা জ্বীন : ২৮)।
এই আয়াতে "আদাদা" শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে হিসাব বুঝোতে। শব্দটি সূরা জ্বীনের সর্বশেষ আয়াতের সর্বশেষ শব্দ। লক্ষনীয়, কোরআনে ৫৭ (১৯*৩)
প্রকারের বিভিন্ন সংখ্যা (আদ্দা) ব্যাবহার করা হয়েছে। সূরা জ্বীন কোরআনের ৭২ নং সূরা আর "আদাদা" শব্দটি এসেছে এই সূরার ২৮ নং আয়াতে। এখন ৭+২+২+৮= কত ? =১৯ !
"আদাদা" শব্দটি সুরাটির শেষ আয়াতের শেষ শব্দ। এই সূরার প্রত্যেকটি আয়াতের শেষ শব্দগুলোর মোট অক্ষর সংখ্যা ১১৪। ১১৪=১৯*৬ ।
সূরাটির ২৮ টা আয়াত শেষ হয়েছে ২৮ টা শব্দ দিয়ে। কিছু কিছু শব্দ পুনরায় এসেছে। এই পুনরায় আসা শব্দগুলোর রিপিটেসন বাদ দিলে পাওয়া যায় ১৯ টি মৌলিক শব্দ।
আর এই ১৯ টি মৌলিক শব্দ গঠিত হয়েছে ১৯ টি বর্ণের ভিন্ন ভিন্ন সমাহারে। উল্লেখ্য আরবী বর্ণমালা ২৮ টি বিভিন্ন বর্ণ নিয়ে গঠিত। "আদাদা" শব্দটি লিখা হয় আইন, দাল, দাল ও আলিফ বর্ণ দিয়ে।
সূরা জ্বীন এ আইন ৩৭ বার, দাল ৫৪ বার, দাল ৫৪ বার, আলিফ ২১৬ বার করে এসেছে।
এই অক্ষরগুলো মোট রিপিটেশন ৩৭+৫৪+৫৪+২১৬=৩৬১। ১৯*১৯ = কত ? ৩৬১! সুবহানাল্লাহ-----
না জানি আরো কত হিসাব বাকি পরে আছে ! বুঝেছেন ! এতকিছু হিসেব করে এই একটি শব্দ "আদাদা"কে বসানো হয়েছে। কি বিষ্ময়কর এ মহাগ্রন্থ ।
১৬) কোরআনে আসা সংখ্যাগুলো :
(ক) কোরআনে মোট ৩০ টি পূর্ণ সংখ্যা এসেছে। কোরআনে আসা এই ৩০ টি পূর্ণ সংখ্যার সমষ্টি ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
(১*+২*+৩*+৪*+৫*+৬*+৭*+৮*+৯*+১০*+১১+১২*+১৯+২০+৩০*+৪০*+৫০+৬০+৭০*+৮০+৯৯+১০০*+২০০*+৩০০+১০০০*+২০০০+৩০০০+৫০০০+৫০,০০০+১০০,০০০=১৬২,১৪৬ (১৯*৮৫৩৪)।
এই সংখ্যাগুলোর মধ্যে স্টার দেয়াগুলো কোরআনে রিপিট করা হয়েছে। এদের রিপিটেসনকে ধরে নিয়ে যোগ করলে, যে সংখ্যা পাওয়া যায় সেটাও ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
আর সংখ্যাটি হলো ১৭৪,৫৯১। ১৯*৯১৮৯!
(খ) কুরআনে ৩০ টি পূর্ণ সংখ্যা ছাড়াও, ৮টি দশমিক সংখ্যার উল্যেখ আছে। এগুলো হলো- ১/২০, ১/৮, ১/৬, ১/৫, ১/৪, ১/৩, ১/২, ২/৩।
এই আটটি সংখ্যাকে ধরলে কোরআনে মোট মৌলিক সংখ্যা দ্বারায় ৩৮টি। ৩৮ সংখ্যাটি ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
অর্থাৎ কোরআনে উল্যেখিত মোট সংখ্যার সংখাও ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। যেসব সংখ্যাকে ঐ সংখ্যা ও ১ ব্যাতিত অন্য কোন সংখ্যা দিয়ে ভাগ করা যায় না তাদেরকে প্রাইম নাম্বার বলা হয়।
১৯ একটি প্রাইম নাম্বার। কুরআনে পূর্ণ সংখ্যার সংখ্যা ৩০ টি। আর ৩০ সংখ্যাটি অংকের ১৯ তম নন-প্রাইম সংখ্যা। (৪,৬,৮,৯,১০,১২,১৪,১৫,১৬,১৮,২০,২১,২২,২৪,২৫,২৬,২৭,২৮, ৩০)।
কুরআনে ৮টি দশমিক সংখ্যা আছে। অংকে ৮ নাম্বার প্রাইম নাম্বার হচ্ছে ১৯। গুনে দেখতে পারেন। (২,৩,৫,৭,১১,১৩,১৭, ১৯)।
১৭) ১৯তম অক্ষর ক্বাফ : ক্বাফ অক্ষরটি সংখ্যাগত মানের দিক থেকে আরবী বর্ণমালার ১৯তম অক্ষর। (আলিফ, বা, তা, ছা, জ্বিম, হা, খা, দাল, জাল, রা, ঝা, ছিন, সিন, সোয়াদ, দোয়াদ, ত্বো, জো,
আইন, গইন, ফা, ক্বাফ) যেহেতু ১৯ নাম্বার অক্ষর,
ক. কোরআনের সকল সূরার ১৯ নং আয়াতগুলোতে ক্বাফ অক্ষরটি এসেছে মোট ৭৬ বার। ৭৬ কে ১৯ দ্বারা ভাগ করা যায়। ৭৬/১৯=৪।
খ. কোরআনে যেসব সূরার অবস্থানকে ১৯ দ্বারা ভাগ করা যায়, ঐ সকল সূরায় ক্বাফ এসেছে মোট ২২৮ বার। যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
১৯ ৩৮ ৫৭ ৭৬ ৯৫ ১১৪ মোট ৮৬ ৭৪ ৪৯ ১৫ ৩ ১ ২২৮
১৮) হা-মিম এই দুটি অক্ষর দিয়ে শুরু হয়েছে কোরআনের ৭ টি সূরা।
এগুলো হলো ৪০, ৪১, ৪২, ৪৩, ৪৪, ৪৫ ও ৪৬ নং সূরা।
সূরাগুলোতে হা ও মিম এই অক্ষর দুটি এসেছে এভাবে সূরা নং হা মিম ডিজিট গুলোর যোগফল
মোট ডিজিট ৪০ ৬৪ ৩৮০, ৬+৪+৩+৮+০ ২১ ৪১ ৪৮ ২৭৬ ৪+৮+২+৭+৬ ২৭ ৪২ ৫৩ ৩০০ ৫+৩+৩+০+০ ১১ ৪৩ ৪৪ ৩২৪
৪+৪+৩+২+৪ ১৭ ৪৪ ১৬ ১৫০
১+৬+১+৫+০ ১৩ ৪৫ ৩১ ২০০
৩+১+২+০+০ ৬ ৪৬ ৩৬ ২২৫
৩+৬+২+২+৫ ১৮ মোট ২৯২ ১৮৫৫ ১১৩ মোট হা-মিম =২১৪৭ (১৯*১১৩)!!! মোট ডিজিট =১১৩।
শুধু এই নয়- যদি আমরা সূরাগুলোকে দুটি গ্রুপে ভাগ করি; এভাবে ৪০,৪১,৪২ এক গ্রুপে আর বাকী চারটি আরেক গ্রুপে,
তাহলে প্রতি গ্রুপে হা-মিমের মোট সংখ্যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য পাওয়া যাবে।
আর উপরের মতই ডিজিটগুলোর মোট যোগফল, হা-মিমের মোট সংখ্যাকে ১৯ দিয়ে ভাগ করার পর যা থাকে তার সাথে মিলে যাবে!!!
হা-মিম, ১১২১ (১৯*৫৯) ও ১০২৬ (১৯*৫৪)টি। ডিজিটের যোগফল, ৫৯ ও ৫৪।
রাব্বুল আলামিন তার সব সৃষ্টির মধ্যেই, এরকম সামঞ্জস্য বজায় রেখে সৃষ্টি করেছেন। কেউ কেউ তা চোখ খুলে দেখেনা, ফলে বুঝেনা।
১৯) আল্লাহ পাক কোরআনকে ১৯ সংখ্যাটির গানিতীক কোড দিয়ে সতর্কতার সাথে নাজিল করেছেন। আর দুটি উদাহরণ দেই,ব্যাপারটা পরিষ্কার হবে।
ক. আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বারটি জয়গায় লুত সম্প্রদায়ের কথা উল্যেখ
করেছেন। এবং প্রতিবার তিনি তাদের সম্বোধন করেছেন "কওমে লুত" বলে। কিন্তু সূরা ক্বাফ এর ১৩ নং আয়াতে তিনি লুত সম্প্রদায়ের কথা উল্লেখ
করতে গিয়ে "ইখওয়ানুল লুত: বলেছেন; আর্থের দিকে থেকে উভয়টাই সমান। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা তাহলে কেন এখানে "ক্বওমে লুত" শব্দটি ব্যাবহার করলেন না ?
কারণ এই সূরাতে এখানে "কওমে লুত" ব্যাবহার হলে এই সূরাতে "ক্বাফ" অক্ষরটির সংখ্যা ৫৮ হয়ে যেতো, যেটাকে ১৯ দ্বারা ভাগ করা যায় না।
সে জন্য একই অর্থবোধক "ইয়াখওয়ানুল লুত" ব্যাবহার করে ক্বাফ এর সংখ্যা এই সূরাতে ৫৭ রাখা হয়েছে, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
থ. শুধু ‘ক্বাফ’ অক্ষর দিয়ে শুরু হয়েছে সূরা ‘কাহফ’ , এখানে ক্বাফ অক্ষরটি গণনায় ঠিক রাখার জন্য আল্লাহতায়ালা যে ব্যবস্থা নিয়েছেন তা লক্ষণীয়।
সূরা কাহফের ২৫ নং আয়াতটিতে ৩০৯ বছর বুঝানো হয়েছে এভাবে "তারা গুহার ভিতরে ছিল ৩০০ বছর, আরো ৯ বছর।"
আবার নূহ (আ এর সাথে সম্পর্কিত ৯৫০ সংখ্যাটি বলতে গিয়ে কোরআন ১০০০ ও ৫০ এর সাহায্য নিয়েছে এভাবে "১০০০ থেকে ৫০ বাদ দিলে যা হয়।"
এখন প্রশ্ন হলো আল্লাহ তায়ালা কি পারতেন না, এভাবে প্রকাশ না করে সংখ্যাগুলিকে সরাসরি প্রকাশ করতে ? অথবা কেন তিনি এমন পদ্ধতি ব্যাবহার করলেন ?
কারন ৯৫০ কে সরাসরি "৯৫০" লিখলে বা ৩০৯ কে সরাসরি "৩০৯" এভাবে লিখলে, কোরআনে যে সংখ্যাগুলি পাওয়া যাবে তাদের যোগফলকে ১৯ দ্বারা ভাগ করা যাবে না!
এভাবে কোরআন এর প্রতিটি আয়াত, এমনকি প্রতিটি শব্দ ১৯ এর গানিতিক রহস্যে সাজানো। একটি শব্দের হেরফের করা সম্ভব নয়। কি চমৎকার আর যৌক্তিক মহান প্রভুর নিদর্শণ!
(২০) পবিত্র কোরআন যার নিকট এসেছে তিনি হলেন ‘রসূল’, কোরানে রসূল শব্দটি এসেছে ৫১৩ বার যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
যার বাণী রসূল বহন করে এনেছেন তিনি হলেন ‘রব’ কোরানে এ শব্দটি এসেছে ১৫২ বার,যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
কোরআনের কেন্দ্রীয় দাওয়াত হচ্ছে ‘এবাদত’ কোরআনে এ শব্দটি এসেছে ১৯ বার, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
দাওয়াত এর পরিভাষা হচ্ছে ‘আবদ’, এটিও এসেছে ১৫২ বার, আর যে ব্যক্তি এই ‘আবদ’ এর কাজ করবে তিনি হলেন ‘আবিদ’ কোরানে এটিও এসেছে ১৫২ বার।
আল কোরআনের বিভিন্ন সূরার শুরুতে কিছু বিচিত্র বর্ণমালা ব্যবহিত হয়েছে, এগুলোকে বলা হয় ‘হরুফে মোকাত্তায়াত’ এগুলোর অর্থ আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না,
অবশ্য গবেষণার ফলে এগুলোর একটা গানিতিক রহস্য জানা গেছে। এই মোকাত্তায়াত হরফ গুলো মোট ২৯ টি সূরার শুরুতে ১৪ টি বিভিন্ন বর্ণমালায় ১৪ টি বিভিন্ন পদ্ধতিতে এগুলোকে এ সব জায়গায় বসানো হয়েছে। এদের সম্মিলিত যোগফল হচ্ছে (২৯+১৪+১৪)=৫৭ যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
‘আলিফ-লাম-মীম’ মোকাত্তায়াতটি মোট ৬ টি সূরার শুরুতে ব্যবহিত হয়েছে। এই সূরাগুলোর মধ্যে আলিফ,লাম,মীম বর্ণ তিনটি যতোবার ব্যবহিত হয়েছে, তাদের সমষ্টি ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
(২১) পরিসংখ্যান মিলিয়ে দেখা যাকঃ
সূরা ‘বাকারায়’ ‘আলিফ’ এসেছে ৪৫০২ বার, ‘লাম’ ৩২০২ এবং ‘মীম’ এসেছে ২১৯৫, এ সবগুলোর সমষ্টি দাঁড়ায় ৯৮৯৯, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা ‘আলে ইমরান’ –এ ‘আলিফ’ এসেছে ২৫২১ বার, ‘লাম’ ১৮৯২ এবং ‘মীম’ এসেছে ১২৪৯, এ সবগুলোর সমষ্টি দাঁড়ায় ৫৬৬২, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা ‘আন কাবুত’ –এ ‘আলিফ’ এসেছে ৭৭৪ বার, ‘লাম’ ৫৫৪ এবং ‘মীম’ এসেছে ৩৪৪, এ সবগুলোর সমষ্টি দাঁড়ায় ১৬৭২, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা ‘রোম’ –এ ‘আলিফ’ এসেছে ৫৪৪ বার, ‘লাম’ ৩৯৩ এবং ‘মীম’ এসেছে ৩১৭, এ সবগুলোর সমষ্টি দাঁড়ায় ১২৫৪, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা ‘লোকমান’ –এ ‘আলিফ’ এসেছে ৩৪৭ বার, ‘লাম’ ২৯৭ এবং ‘মীম’ এসেছে ১৭৩, এ সবগুলোর সমষ্টি দাঁড়ায় ৮১৭, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা ‘সাজদায়’ ‘আলিফ’ এসেছে ২৫৭ বার, ‘লাম’ ১৫৫ এবং ‘মীম’ এসেছে ১৫৮, এ সবগুলোর সমষ্টি দাঁড়ায় ৫৭০, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। আবার এই সূরাগুলোর অক্ষরগুলো গুনলে দেখা যাবে মোট ‘আলিফ’ এসেছে ৮৯৪৫ বার, মোট ‘লাম’ ৬৪৯৩ এবং মোট ‘মীম’ এসেছে ৪৪৩৬, এ সবগুলোর সমষ্টি দাঁড়ায় ১৯৮৭৪, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা ‘মারইয়াম’ এর মোকাত্তায়াত গঠিত হয়েছে পাঁচটি ভিন্ন ধরনের বর্ণ দিয়ে, এগুলো হল , ক্বাফ, হা, ইয়া,আইন,ছোয়াদ। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে এ সূরায়ঃ ‘ক্বাফ’ এসেছে ১৩৭ বার, ‘হা’ এসেছে ১৭৫ বার, ‘ইয়া’ এসেছে ৩৪৩ বার, আইন এসেছে ১১৭ বার, সোয়াদ এসেছে ২৬ বার,এই পাঁচটি হরফের মোট যোগফল (১৩৭+১৭৫+৩৪৩+১১৭+২৬)= ৭৯৮, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা ‘আ’রাফ’-এর মোকাত্তায়াত হচ্ছে ‘আলিফ’, ‘লাম’, ‘মীম’, ‘সোয়াদ’। এই সূরাটিতে ‘আলিফ’ এসেছে ২৫২৯ বার। ‘লাম’ এসেছে ১৫৩০ বার। ‘মীম’ ব্যবহিত হয়েছে ১১৬৪ বার। ‘সোয়াদ’ এসেছে ৯৭ বার। মোকাত্তায়াত চারটির যোগফল (২৫২৯+১৫৩০+১১৬৪+৯৭)= ৫৩২০, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা ‘ইয়াসীন’ এর মোকাত্তায়াত হচ্ছে ‘ইয়া’ এবং ‘সীন’। সূরাটিতে এই দুটি অক্ষর ব্যবহিত হয়েছে ২৮৫ বার, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা ‘মোমেন’ থেকে ‘সূরা’ ‘আহক্বাফ’ পর্যন্ত এই সাতটি সূরার শুরুতে রয়েছে একই মোকাত্তায়াত – ‘হা’ এবং ‘মীম’। ধারাবাহিক ভাবে এ সাতটি সূরায় ‘হা’ এবং ‘মীম’ এ দুটি অক্ষর মোট ২১৪৭ বার ব্যবহিত হয়েছে, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা ‘ইউনুস’ এবং সূরা ‘হুদ’ শুরু হয়েছে ‘আলিফ’ ‘লাম’, ‘রা’ এই মোকাত্তায়াত দিয়ে ।সূরা দুটিতে হরফ তিনটি ব্যবহিত হয়েছে ২৮৮৯ বার , এটি ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা ‘ইউসূফ’, সূরা ‘ইবরাহীম’ এবং সূরা ‘আল হেজর্’ এ একই মোকাত্তায়াত রয়েছে অর্থাৎ ‘আলিফ’ ‘লাম’, ‘রা’।
সূরা ‘ইউসূফ’ এ হরফগুলো এসেছে ২৩৭৫ বার, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা ‘ইবরাহীম’ এ হরফগুলো এসেছে ১১৯৭ বার, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
সূরা ‘আল হেজর্’এ হরফগুলো এসেছে ৯১২ বার, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
মোকাত্তায়াত সম্বলিত সর্বশেষ সূরা হচ্ছে সূরা ‘আল কালাম’। এর শুরুতে মাত্র একটি হরফ বিশিষ্ট মোকাত্তায়াত ব্যবহিত হয়েছে, সেটি হচ্ছে ‘নূন’ , এ সূরায় এ অক্ষরটি এসেছে ১৩৩ বার যা অবশ্যই ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
কেন এত ১৯ ? :
১৯ এর এতোসব প্রয়োগ দেখে হয়তো আপনার জানতে ইচ্ছে করছে, এটার কি দরকার ছিল অথবা কোরআনের বাহ্যিক অবস্থানের সাথে এর সম্পর্ক কি। উত্তরটা সহজ।
কোরআনকে যে কোন ধরনের বিকৃতি থেকে রক্ষা করা। আজ সারা পৃথিবীর প্রতিটা মুসলমানের ঘরে কোরআন আছে। এই কিতাব যেহেতু একটা ধর্মগ্রন্থ তাই এটা অবিকৃতির সাথে সবার ঘরে শোভা পাবে এটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু ইসলামের শত্রুরা বসে নেই। তারা চেষ্টা করে যাচ্ছে অবিরাম, কোরআনকে বিকৃত বইয়ের গাদায় ফেলতে। কোরআনকে কেউ যদি বিকৃত করার চেষ্টা করে তা এখন ধরা সম্ভব, ১৯ এর ম্যাথমেটিক্যাল কোড দিয়ে।
মহান আল্লাহ এটাকে এমন একটা রক্ষাকবচ বানিয়ে দিয়েছেন, যেটা কোন মানব মস্তিস্ক চিন্তা করারও শক্তি রাখে না।
কুরআনে ১৯ এর এই অলৌকিক ভারসাম্যকে যদি কেউ বুঝে, সে স্বীকার করতে বাধ্য হবে এটা এমন একটা বই যেটার মত লেখা, মানুষের ক্ষমতা ও শক্তির বাহিরে। এর পিছনে হাত আছে এক মহান শক্তির।
আর বইটির মালিক বলেই দিয়েছেন- "বলূন: যদি সকল মানব আর জ্বীন মিলে, এই কোরআনের অনুরুপ রচনা আনয়ন করার জন্য জড়ো হয় এবং তারা পরস্পরকে সাহায্যও করে; তবুও তারা কখনো এর অনুরুপ কিছু আনতে পারবে না।
(সূরা বনী ইসরাইল"৮৮)।
আল্লাহ আমাদের কুরআন নিয়ে গবেষনা করার তৌফিক দান করুন আমিন ।
আল্লাহুম্মা ছাল্লে আলা মোহাম্মাদ ওয়ালা আলে মোহাম্মাদ
আল্লাহু আকবার
ReplyDelete